ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। একই সঙ্গে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান নিয়েও ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
শফিকুল আলম বলেছেন, অধ্যাপক ইউনূসকে ‘জঙ্গি নেতা’ হিসেবে উপস্থাপনের জন্য কোটি কোটি ডলার খরচ করা হচ্ছে। এর সঙ্গে ভারতীয় গণমাধ্যম জড়িত।
আজ শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘দ্রোহের গ্রাফিতি: ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান’ শিরোনামের একটি বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে শফিকুল আলম এ অভিযোগ আনেন।
শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে শফিকুল আলম বলেন, আওয়ামী লীগ এবং পতিত স্বৈরাচার, চোরতন্ত্রের জননী ও গুমের জননী চাচ্ছেন বাংলাদেশের ন্যারেটিভকে (বয়ান) চ্যালেঞ্জ করতে। তারা বলছেন তিন হাজার পুলিশ মারা গেছে, তাদের ওয়েবসাইটে অধ্যাপক ইউনূসকে ‘জঙ্গিদের নেতা’ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। এটা খুবই পরিকল্পিত অপপ্রচার। এর সঙ্গে ভারতীয় মিডিয়াও জড়িত।
তিনি আরও বলেন, হাসিনার অলিগার্কেরা মিলিয়ন ডলার খরচ করছে। তারা সারা পৃথিবীকে বোঝাতে চাচ্ছে, বাংলাদেশে যা হয়েছে তা আসলে গণ-অভ্যুত্থান নয়। এটা বড় রকমের চক্রান্ত।
এ সময় দেশের চলমান পরিস্থিতিতে সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ করেন প্রেস সচিব।
তিনি বলেন, যে যেখানে আছেন সবাই শান্ত থাকুন। অধ্যাপক ইউনূস সবাইকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। আমাদের কাজ হচ্ছে গবেষণার মাধ্যমে ১৫ বছরের ভয়াবহতাকে তুলে ধরা। স্বৈরাচার সরকার যাতে ফিরে আসতে না পারে সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। পতিত সরকার যাতে মাথা চাড়া দিতে না পারে গ্রাফিতির মাধ্যমে তা ছড়িয়ে দিতে হবে।
এ সময় হুঁশিয়ার করে সরকারের মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশে আর কোনোদিনই যেন আওয়ামী স্বৈরাচার ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা ফিরতে না পারে সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
শেখ হাসিনা ও তার লোকেরা বাংলাদেশ থেকে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, সাড়ে তিন হাজার মানুষকে গুম করা হয়েছে। জুলাই-আগস্টে দুই হাজার মানুষকে খুন করা হয়েছে। শেখ হাসিনার সময়ে শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড হয়েছে, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়ের পর কী ভয়ানক হত্যাকাণ্ড হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তথ্য উপাত্তের অভাবে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরবর্তী সময়ে দুবছরের শিশু থেকে শুরু করে বিরোধীরাও মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরী, সৈয়দ আবদাল আহমেদ প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৫
এসএএইচ