পটুয়াখালী: নিখোঁজ হওয়ার ৫৪ ঘণ্টা পর ঢাকা থেকে গণ অধিকার পরিষদের অঙ্গ-সংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাবিষয়ক সহ-সম্পাদক রবিউল আউয়াল অন্তরকে (৩০) উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) ভোরে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে অন্তরকে উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আনোয়ার জাহিদ।
রোববার বিকেল পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য জানান এসপি মো. আনোয়ার জাহিদ।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে অন্তর কলাপাড়া শহর থেকে লোন্দা গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। এরপর থেকে তার কোনো খুঁজে পাচ্ছিলেন না স্বজনরা। পরে কলাপাড়া থানা পুলিশ তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি কলাপাড়া-পটুয়াখালী সড়কের পায়রা পোর্ট ফোরলেন ও সিক্সলেন সড়কের মাঝ বরাবর রজপাড়া মাদ্রাসা সংলগ্ন সড়ক থেকে পার্কিং করা অবস্থায় উদ্ধার করে। কিছুটা দূর থেকে একটি হেলমেট উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ কলাপাড়া থানায় একটি জিডি করে। এছাড়াও অন্তরের বড় ভাই তুষার আল মামুন এ ঘটনায় পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছয় কর্মকর্তার নামোল্লেখ করে থানায় শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) একটি মামলা করেন।
মামলায় বলা হয়, কলাপাড়া পৌর শহরের ডিজিটাল প্রিন্টিং প্রেস ‘গ্রাফিক্স ওয়াল’ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বৃহস্পতিবার রাতে ১১টার দিকে বাড়িতে ফিরছিল। এরপর থানার ফোনকল পেয়ে বিষয়টি তারা জানেন। এদিকে অন্তরকে উদ্ধারের দাবিতে টানা তিন দিন সড়ক অবরোধ করে দফায় দফায় বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেন পরিবার ও স্থানীয়রা। এরপর পুলিশের অনুসন্ধান ও উদ্ধার এবং তদন্তে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
ভিকটিম অন্তর জানান, কলাপাড়ার টিয়াখালী ইউনিয়নের রজপাড়া সাকিনস্থ সুয়েজ গেটের সামনে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের পাশ থেকে ব্যক্তিরা সাদা মাইক্রোবাসযোগে এসে ভিকটিমের মোটরসাইকেল চাপা দিয়ে ভিকটিমকে রাস্তার পাশে ফেলে দেয়। তাৎক্ষণিক তারা মাইক্রোবাস থেকে নেমে জোরপূর্বক তাকে মাইক্রোবাসে ভিকটিমকে তুলে নিয়ে ভাঙ্গা মাওয়ায় নিয়ে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে ভিকটিম নিজে বাসযোগে ঢাকায় তার বন্ধু আল-আমিনের কাছে চলে যায়। ওই দিন রাতে আল-আমিন ভিকটিমকে কামরাঙ্গীরচর এলাকায় তার বন্ধু আনাছ আহমেদ প্রান্তরের বাসায় রেখে আসেন।
আনাচ আহমেদ প্রান্তর জানান, বাসায় এসে আল-আমিন জানান তার সাথে থাকা তার বন্ধু অন্তরের পারিবারিক সমস্যার কারণে তাদের বাসায় কিছুদিন থাকবেন এবং সমস্যা সমাধান হলে তিনি চলে যাবেন। প্রান্তর ভিকটিমকে সরল বিশ্বাসে সেখানে থাকতে দেন। ভিকটিম তার বাসা থেকে বের হতেন না, তারা বাইরে থেকে খাবার এনে দিলে ভিকটিম রুমে বসে খাবার খেতেন।
প্রান্তর আরও জানান, ভিকটিম অন্তরের মাধ্যমে জানতে পারেন, তার এলাকায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে তাদের আন্দোলন চলছে এই আন্দোলন সফল হলে তিনি তার বাসায় চলে যাবেন। বিষয়টি নিয়ে এখনও তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদ চলমান থাকায় সুনির্দিষ্ট কিছু বলতে আরও সময় লাগবে বলেও জানান পুলিশ সুপার।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহমেদ মঈনুল হাসান, অতিরিক্ত সদর সার্কেল সাজেদুল ইসলাম, জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কলাপাড়া থানার ওসি মো. জুয়েল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫
এএটি