পাবনার সাঁথিয়ায় মধ্যরাতে সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে পণ্যবাহী ট্রাকসহ একাধিক গাড়িতে ডাকাতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দিনগত মধ্যরাত ২টার দিকে পাবনা-সাঁথিয়া সড়কের ছেচানিয়া ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান ডাকাতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে কারা এই ডাকাতি সংগঠিত করেছে সেটি নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মধ্য রাত দেড়টা থেকে ২টার দিকে সাঁথিয়ার ছেচানিয়া ব্রিজের পাশে সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে প্রথমে একটি পণ্যবাহী ট্রাক আটকে রাখে ডাকাত দল। এতে কিছু সময়ের মধ্যেই ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকৃত পণ্যবাহী ট্রাক, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি আটকে পড়ে। এসময় ৩০ থেকে ৩৫ জনের ডাকাত দল দেশীয় অস্ত্র হাসুয়া, রামদা, ছুরি, চাকুসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে পর্যায়ক্রমে গাড়িগুলোতে ডাকাতি চালায়। গাড়ির গেট খুলতে দেরি করায় কিছু গাড়ি ভাঙচুরও করে। এসময় পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীদের মারধর করে তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন, টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে এ তাণ্ডব।
ডাকাতির কবলে পড়া আব্দুস সালাম নামে এক ইসলামী বক্তা ফেসবুকে দেওয়া ভিডিও বক্তব্যে বলেন, কিছুক্ষণ আগে এই সড়কে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে গাড়িগুলোতে ডাকাতি করা হয়েছে। হুট করে আমাদের গাড়িতে আক্রমণ করে ডাকাত দলের সদস্যরা। বারবার গাড়িতে আঘাতের পর আমরা চালককেকে গেট খুলে দিতে বললে ডাকাতরা ঢুকে চালকের গলা ও পেটে চাকু ধরে।
একইভাবে অন্যদেরও জিম্মি করে সব লুটে নিয়ে যায়। আমরা বলেছি, ভাই যা আছে সব নেন, কিন্তু কাউকে আঘাত কইরেন না। আমাদের গাড়িতে কাউকে আঘাত করেনি। অনুরোধ করায় আমার দুটি মোবাইল
ফেরত দিয়ে যায়।
তিনি বলেন, একটি মাইক্রোবাসে করে দেশে ফিরছিলেন এক প্রবাসী। ওই গাড়িতে হামলা করে কয়েকজনকে মারধর করে সব লুটে নিয়ে গেছে। একইভাবে সব গাড়িতে পর্যায়ক্রমে ডাকাতি চালায়। গাড়ি ভাঙচুর ও অনেককেই মারধর করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবু বলেন, ঘটনা শুনেছি। এখনো বিস্তারিত জানি না। তবে ওই রাস্তাটি খুব বেশি ব্যস্ত না হলেও বেড়া-বাঘাবাড়ি হয়ে ঢাকায় যাওয়ার জন্য বেশকিছু পণ্যবাহী গাড়ি ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে থাকে। ডাকাত দলের সদস্যরা জেনেই গাছ ফেলে ডাকাতি করেছে।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ পাঠানো হয়। সুনির্দিষ্ট করে সংখ্যা বলতে না পারলেও কয়েকটি গাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজুনুর রহমান বলেন, ডাকাতি চলাকালীন রাতেই ভুক্তভোগী একজন ট্রিপল নাইনে ফোন করেছিলেন। সেখান থেকেই বিষয়টি অবগত হই আমরা। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়েছে। বেশ কয়েকটি ছোট বড় গাড়িতে ডাকাতি করেছে তারা। তবে সংখ্যায় ৪ থেকে ৫টির মতো হবে। বিষয়টি নিয়ে মাঠে কাজ করছি আমরা। খুব শিগগিরই ডাকাত চক্র ধরা পড়বে।
এ ঘটনায় যারা ভুক্তভোগী তাদের এসপি অফিসে আসতে বলেছি। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি আমরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০২৫
আরএ