ঢাকা, সোমবার, ১৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৩ মার্চ ২০২৫, ০২ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

নিজের ৩ বছরের ছেলেকে খুন করে রেললাইনের পাশে লুকিয়েছিলেন শিরিন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০০ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২৫
নিজের ৩ বছরের ছেলেকে খুন করে রেললাইনের পাশে লুকিয়েছিলেন শিরিন

নরসিংদী: নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় আনাছ মিয়া নামে তিন বছরের শিশুকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে তার মা শিরিন আক্তারকে (২৫) ধরে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।  

শনিবার (১ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ মির্জানগর এলাকায় এ হত্যার ঘটনা ঘটে।

 

অভিযুক্ত শিরিন আক্তার ওই এলাকার সৌদি প্রবাসী ডালিম মিয়ার স্ত্রী।

এ ঘটনার পর নিখোঁজ মা শিরিন আক্তারকে রবিবার  সকাল ৯টার দিকে আটক করেছে এলাকাবাসী। রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)  আদিল মাহমুদ ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাঁচ বছর আগে ডালিম মিয়া পারিবারিকভাবে একই উপজেলার হাইরমারা এলাকার শিরিন আক্তারকে বিয়ে করেন। বিয়ের তিন বছর পর সৌদি আরবে যান তিনি। এরপর শিরিন তাদের একমাত্র সন্তান আনাছকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করছিলেন। প্রবাসে থাকা স্বামী ডালিম মিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝগড়া চলছে শিরিনের। এসব দ্বন্দ্বের কারণেই রাতে শিশুপুত্র আনাছকে বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান শিরিন। ঘটনার সময় পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে পাশের ঘরে তারাবির নামাজ আদায় করছিলেন শিশুটির দাদি। চিৎকার শুনে ছুটে গিয়ে তিনি নাতির রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান।  

এ ঘটনার পর রোববার সকাল ৯টার দিকে শিরিনকে একই ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামে রেললাইনের পাশে বসে থাকতে দেখে আটক করেন জনতা। এসময় ছেলেকে হত্যার কারণ জানতে চাইলে কিছু না বলে মাথা নিচু করে রাখেন তিনি। পরে এলাকাবাসী তাকে পুলিশে দেন।  

আমিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আবু বক্কর জানান, যে মায়ের কাছে তার সন্তান নিরাপদ নয়, তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।

এ ব্যাপারে শিরিন আক্তারের শ্বশুর রহম আলী বলেন, আমার ছেলের বউয়ের মাথায় কিছু সমস্যা রয়েছে। আনাছের জন্মের পর থেকেই তার মা তাকে মারধর করত। সে কারণে আমরাই আনাছকে লালন পালন করে বড় করেছি। তার মায়ের কাছে বেশি দিতাম না। গতরাতে আমার নাতিকে আদর করে ঘুম পাড়িয়ে নামাজে যাই। পাশে বসা ছিল তার মা। পরে জানতে পারি আমার নাতিকে কুপিয়ে সে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। রাতে আর তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। সকালে এলাকাবাসী তাকে আটক করে খবর দিলে আমরা ছুটে যাই।

রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় কেউ থানায় এখনো লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযুক্ত মাকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২৫
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।