ঢাকা, রবিবার, ২৪ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৯ মার্চ ২০২৫, ০৮ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণসহ ১০ দফা দাবি বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৯ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০২৫
মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণসহ ১০ দফা দাবি বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির অনুষ্ঠানে অতিথিরা। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি। দাবি পূরণ না হলে আসন্ন ঈদুল ফিতরের পর কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা।

শনিবার (৮ মার্চ) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি ও হুঁশিয়ারি দেন সমিতির নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, দেশের সিংহভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী দ্বারা। কিন্তু পরিতাপের বিষয় আমরা এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মাত্র এক হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া, ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পাই। অথচ একই কারিকুলামের অধীন একই সিলেবাস, একই একাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে পাহাড়সম বৈষম্য।

তারা আরও বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেল সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেলের একধাপ নিচে প্রদান করা হয় এবং সহকারী প্রধান শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল প্রদান না করার ফলে উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান হওয়ায় সহকারী প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে।

তাদের ১০ দফা দাবি হলো
(১) মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্টকরণসহ শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করা।

(২) আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগেই সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মতো পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা দেওয়া।

(৩) ইএফটি সমস্যার দ্রুত সমাধান করা।

(৪) সরকারি স্কুলের মতো বেসরকারি স্কুলের ‘প্রধান শিক্ষক’-এর বেতন স্কেল ষষ্ঠ গ্রেডে এবং সহকারী প্রধান শিক্ষকদের সপ্তম গ্রেডসহ টাইম স্কেল দেওয়া।

(৫) এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সার্বজনীন বদলি প্রথা চালু করা।

(৬) সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মতো পেনশন প্রথা চালুকরণ এবং চালু না হওয়া পর্যন্ত অবসর গ্রহণের ছয় মাসের মধ্যে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের পাওনা দেওয়াসহ শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত চার শতাংশ কর্তন বন্ধ করা।

(৭) শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরির বয়স বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের মতো ৬৫ বছরে উন্নীত করা।

(৮) পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মতো শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠন এবং শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আনুপাতিক হারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পদায়ন করা।

(৯) ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডি প্রথা বিলুপ্ত করে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো পরিচালনা করা।

(১০) স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা।

এ সময় দাবি আদায়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে শিক্ষক নেতারা বলেন, আগামী ১২ মার্চ বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হবে। আগামী ১৬ মার্চ বেলা ১১টায় দেশের সব জেলা ও বিভাগীয় সদরে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও জেলা প্রশাসক/বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া।

এরপরও যদি দাবি পূরণে সুনির্দিষ্ট প্রজ্ঞাপন জারি করা না হয় তাহলে পবিত্র ঈদুল ফিতরের পরে সারা দেশের হতাশ ও বিক্ষুব্ধ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়ে কঠোর থেকে কঠোরতর কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান তারা।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম আল মামুন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০২৫
এসসি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।