ঢাকা, রবিবার, ২৪ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৯ মার্চ ২০২৫, ০৮ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

সেহরির সময় চুলা জ্বালাতেই বিস্ফোরণ, একই পরিবারের ৬ জন দগ্ধ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ও ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২২ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০২৫
সেহরির সময় চুলা জ্বালাতেই বিস্ফোরণ, একই পরিবারের ৬ জন দগ্ধ চিকিৎসাধীন গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধ রোগী

চাঁদপুর: সেহেরির জন্য খাবার গরম করতে চুলা জ্বালালে মুহূর্তে ঘটে বিস্ফোরণ। এ দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৬ জন দগ্ধ হয়েছেন।

 

রোববার (৯ মার্চ) রাত ৪টায় চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়া সাহাবাড়ি রোডে জাকির হোসেনের বাড়ির চতুর্থ তলায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। লাইনের গ্যাস পাইপ লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে ঘটেছে বলে জানা গেছে।  

স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। এদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ঢাকায় জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়েছে।

দগ্ধরা হলেন - আব্দুর রহমান সরদার (৭০), তার স্ত্রী শানু বেগম (৬০), বড় ছেলে ইমাম হোসেন সরদার (৪০), বড় ছেলের স্ত্রী খাদিজা বেগম (৩২), মেজো ছেলে মিরাজের স্ত্রী নুসরাত জাহান নিপা (২১) ও ছোট ছেলে বাকপ্রতিবন্ধী মাহবুবুর রহমান মুহিন (১৮)। এদের মধ্যে ইমাম হোসেন ও নিপা চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাকিদের ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।

চিকিৎসাধীন গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধ রোগী

চাঁদপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইমাম হোসেন বলেন, আমি শহরের বড় স্টেশন মাছঘাটে মাছের ব্যবসা করি। অগ্নিদগ্ধ সবাই আমার পরিবারের সদস্য।

দগ্ধ আব্দুর রহমান সরদারের ভাগনে মাহমুদ বলেন, ভোররাতে সেহেরির খাবার গরম করতে চুলা জ্বালালে বিস্ফোরণ ঘটে। পরে আমাদের উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।  

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মাহমুদুল হাসান জানান, ঢাকায় যাদের পাঠানো হয়েছে তাদের শরীরের অনেকাংশ পুড়ে গেছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুইজনের ২০ ভাগ পুড়েছে। দগ্ধ কাউকেই শঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না।

হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক রফিকুল হাসান ফয়সাল বলেন, দগ্ধ রোগীদের হাসপাতালে আনার পর ৪ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় রেফার করা হয়। বাকি দুইজন হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি কেয়ারে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ঢাকা বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, আব্দুর রহমানের শরীরের ১৮ শতাংশ, শাহনাজের ২০, খাদিজার ৮৫ ও মুহিনের ১৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাদের ৪ জনের অবস্থায়ই গুরুতর।

দগ্ধ আব্দুর রহমানের মেজো ছেলে মোহাম্মদ মিরাজ বাংলানিউজকে জানান, বাসাটিতে বাবা-মা, বড় বোন, বোনের সন্তান, বড় ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী ও ২ সন্তান, মিরাজ নিজে ও তার স্ত্রী, এবং ছোট ভাই থাকেন। ভোর ৪টা ২০ মিনিটের দিকে তারা একে একে সবাই ঘুম থেকে ওঠেন সেহরি করার জন্য। খাবার আগেই রান্না করা ছিল। মিরাজ যখন বড় বোনকে ডাকতে তার রুমে যান তখনই বাসায় একটি বিস্ফোরণ হয়। মুহূর্তেই আগুন ধরে যায় সবকিছুতে। পুড়ে যায় পরিবারের ৬ জন। ভাগ্যক্রমে তিনি ও বড় বোন এবং ৩ শিশু অক্ষত রয়ে যান। পরবর্তীতে আগুন নিভিয়ে তাদেরকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে আশঙ্কাজনক ৪ জনকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, বাকি দুজনকেও ঢাকায় নিয়ে আসা হচ্ছে। রান্নার চুলা থেকে গ্যাস লিকেজ হওয়ায় এই বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৬ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০২৫
এজেডএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।