ঢাকা, সোমবার, ৩ চৈত্র ১৪৩১, ১৭ মার্চ ২০২৫, ১৬ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে কাজে ফিরলেন মেট্রোরেল কর্মীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২৫
কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে কাজে ফিরলেন মেট্রোরেল কর্মীরা ফাইল ছবি

ঢাকা: কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে কাজে ফিরেছেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) কর্মীরা।

সোমবার (১৭ মার্চ) সকাল থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা কর্মবিরতি পালনের পর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তারা কাজে ফেরেন।

এরপর থেকে স্বাভাবিকভাবেই টিকিট বিক্রিসহ অন্যান্য কার্যক্রম চলতে দেখা যায়।

জানা যায়, সকাল পৌনে ৯টায় ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ মিরপুর ১০ মেট্রোরেল স্টেশনে এসে স্টাফদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের দাবি আদায়ে আশ্বাস দেন। এরপর কর্মীরা কাজে ফেরেন।

এর আগে সকাল ৭টা ১০ মিনিট থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন ডিএমটিসিএল কর্মীরা। চার কর্মীকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে ও ৬ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেন তারা। এ সময় একক যাত্রার টিকিট বিক্রিসহ যাত্রী সেবার অন্যান্য সেবা বন্ধ থাকে। তবে তাদের এ কর্মবিরতির মধ্যেও মেট্রোরেল চলতে দেখা যায়। তখন র‌্যাপিড পাস বা এমআরটি কার্ডধারীরা স্বাভাবিকভাবেই চলাচল করেন। পাশাপাশি একক যাত্রার কার্ড বন্ধ থাকায় অন্যান্য যাত্রীদেরও বিনা টিকিটেই চলাচল করতে দেখা যায়।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ১৬ মার্চ বিকেল সোয়া ৫টায় ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের চারজন কর্মী এমআরটি পুলিশ দ্বারা মৌখিকভাবে ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন। ওইদিন দুজন নারী কোনো প্রকার পরিচয়পত্র প্রদর্শন না করে সিভিল ড্রেসে বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করে এসে ইএফও অফিসের পাশে অবস্থিত সুইং গেট ব্যবহার করে পেইড জোন থেকে বাইর হতে চান। যেহেতু তারা নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরিহিত ছিলেন না এবং তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি, দায়িত্বপ্রাপ্ত সিআরএ নিয়ম অনুযায়ী তাদের সেখান থেকে পিজি গেট ব্যতীত সুইং গেট দিয়ে বাইর হওয়ার কারণ জানতে চান। তবে সংশ্লিষ্ট পুলিশের কর্মকর্তারা এতে উত্তেজিত হয়ে তর্কে লিপ্ত হন এবং এক পর্যায়ে এমআরটি পুলিশের কন্ট্রোলরুমে চলে যান।

পরে ঠিক একইভাবে দুজন এপিবিএন সদস্য সুইং গেট ব্যবহার করে সুইং গেট না লাগিয়ে চলে যান। এ বিষয়ের কারণ তাদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা আগের ঘটনার জের ধরে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পরে কন্ট্রোলরুম থেকে আরও কয়েকজন পুলিশ এসে দায়িত্বে থাকা সিআরএ’র সঙ্গে ইএফওতে তর্কে জড়িয়ে পড়ে এবং ইএফও থেকে বের হওয়ার সময় কর্মরত সিআরএ’র কাঁধে বন্দুক দিয়ে আঘাত করে এবং কর্মরত আরেকজন টিএমও’র শার্টের কলার ধরে জোরপূর্বক এমআরটি পুলিশ বক্সে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন এবং গুলি করার জন্য বন্দুক তাক করেন। উপস্থিত স্টেশন স্টাফ ও যাত্রীরা বিষয়টি অনুধাবন করেন এবং এমআরটি পুলিশের হাত থেকে কর্মরত টিএমওকে বাঁচিয়ে নিয়ে আসেন। পরিস্থিতি মেট্রোরেল কর্মপরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। এ ঘটনার প্রতিবাদে ও ৬ দফা দাবি আদায়ে কর্মবিরতি ঘোষণা করে মেট্রোরেল স্টাফরা।  

তাদের দাবিগুলো হলো:
১. আগামী এক কার্যদিবসের মধ্যে ঘটনার মূল হোতা উক্ত পুলিশ সদস্য (এসআই মাসুদ)কে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করতে হবে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব পুলিশ সদস্য (কনস্টেবল রেজনুল, ইন্সপেক্টর রঞ্জিত)কে শাস্তি দিতে হবে হবে এবং তাদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।

২. মেট্রোরেল, মেট্রো স্টাফ ও যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে হবে।

৩. এমআরটি পুলিশকে অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।

৪. স্টেশনে দায়িত্বরত সিআরএ টিএমও, স্টেশন কন্ট্রোলারসহ অন্যান্য সব কর্মীদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

৫. অফিসিয়াল পরিচয়পত্র ছাড়া এবং অনুমতি ব্যতিরেকে কোনো ব্যক্তি যেন স্টেশনের পেইড জোনে প্রবেশ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

৬. আহত কর্মীর সম্পূর্ণ চিকিৎসার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১২২ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২৫
এসসি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ