ঢাকা: ‘ঢাকার হাতিরঝিল এলাকা থেকে এক লাখ ৬০ হাজার পিস ইয়াবার বড় চালানসহ চার মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নজরুল ইসলাম ওরফে সোহেল রানা (৩৪), আল-মামুন (৩২), মোহাম্মদ ফারুক ওরফে ওমর ফারুক (৪৬) ও ফারুকের স্ত্রী তানিয়া (৩২)।
শনিবার (২২ মার্চ) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো উত্তর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শামীম আহমেদ।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। আসামিরা অর্জিত অর্থ দিয়ে বায়িং হাউজ ও আবাসন ব্যবসা পরিচালনা করতেন বলে জানিয়েছেন। বিধায় মাদক ব্যবসা থেকে অর্জিত অর্থ মানিলন্ডারিং করা হয়েছে কি না তদন্ত পর্যায়ে এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
চক্রটিকে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়
প্রায় তিন মাস আগে ঢাকা মেট্রো কার্যালয়ের (উত্তর) সহকারী পরিচালক মো. এনায়েত হোসেন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে, একটি সংঘবদ্ধ মাদক ব্যবসায়ী চক্র বায়িং হাউজ এবং আবাসন ব্যবসার আড়ালে টেকনাফ থেকে বিলাসবহুল গাড়িতে ইয়াবার বড় বড় চালান এনে ঢাকা শহরের বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় এবং দেশের বিভিন্ন জেলায় পাইকারী মাদক ব্যবসায়ীদের সরবরাহ করে। তখন থেকেই অধিদপ্তর তাদের ওপর কড়া নজরদারি বজায় রাখলেও তাদের সুচতুর কৌশলে তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ধরা ছোঁয়ার বাইরে ছিল। তাদের বিরুদ্ধে গত মাসে একটি অভিযান পরিচালনা করলেও তা ব্যর্থ হয়।
সর্বশেষ সপ্তাহ আগে গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, এই চক্রটি ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাচারের উদ্যোগ নিয়েছে। তারা টেকনাফের একটি রিসোর্টে দীর্ঘদিন গাড়ির পাদানির নিচে প্যানেলে বিশেষ কৌশলে এক লাখ ৬০ হাজার পিস ইয়াবা ঢুকিয়ে প্যানেলটি সুনিপুণভাবে ঝালাই করে রাখেন। সর্বশেষ সংবাদের ভিত্তিতে সহকারী পরিচালক একটি চৌকস রাইডিং টিম গঠন করে শুক্রবার (২১ মার্চ) তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে। এ অভিযানে ঢাকা মেট্রো এলাকায় আসামিদের গাড়িটি প্রায় সাত কিলোমিটারের বেশি রাস্তা ধাওয়া করে আটক করা হয়। প্রথমে তাদের গাড়ি তল্লাশি করে কিছু পাওয়া না গেলে গোয়েন্দা সূত্রে বার বার নিশ্চিত করার পর প্যানেলের ঝালাই করা অংশটি খুলে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দৃষ্টি এড়ানোর জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে তারা বড় বড় ইয়াবার চালান ঢাকায় সরবরাহ ও বিক্রি করেন। গ্রেপ্তারদের নামে রমনা সার্কেলের পরিদর্শক লোকমান হোসেন বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ মোতাবেক সংশ্লিষ্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, আসন্ন ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে মাদক পাচার বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, অধিদপ্তরের সদ্য যোগদানকৃত মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফ অধিদপ্তরের এ অভিযানটিসহ অন্যান্য সব অপারেশনাল কার্যক্রম নিবিড়ভাবে মনিটরিং করছেন। তিনি মাদক ব্যবসা নির্মূল করার জন্য অধিদপ্তরের সব কর্মকর্তা/কর্মচারীকে আত্মনিয়োগ করার জন্য বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় অধিদপ্তরের কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়নে জোরদার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন>> হাতিরঝিল থেকে ৫ কোটি টাকার ইয়াবাসহ চার মাদককারবারি গ্রেপ্তার
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২৫
এজেডএস/এএটি