ঢাকা, রবিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৮ মে ২০২৫, ২০ জিলকদ ১৪৪৬

জাতীয়

ঈদে রাজধানীর বাস প্রত্যন্ত জনপদে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:৫১, এপ্রিল ২, ২০২৫
ঈদে রাজধানীর বাস প্রত্যন্ত জনপদে

নীলফামারী: গার্মেন্টসে কর্মরত কিংবা বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করা অনেক মানুষ কাজের চাপে, সময় ও সুযোগের অভাবে সারা বছর বাড়িতে ফিরতে পারেন না। ঈদের ছুটিতে তারা চেষ্টা করেন পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে।

তবে বাসের টিকিট পাওয়া যেমন কঠিন, তেমনি অনেক সময় গুনতে হয় অতিরিক্ত ভাড়া।

এই পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গের অনেকে দলবদ্ধভাবে গোটা বাস ভাড়া করেই বাড়ি ফেরেন। ঈদ শেষে একইভাবে দলবদ্ধভাবে কর্মস্থলে ফেরেন ভাড়া করা ওই বাসেই। এসব বাস মূলত রাজধানীসহ আশপাশের জেলায় চলাচল করে। ঈদযাত্রায় ভাড়া করা এমন কয়েকটি বাসের দেখা মিলেছে নীলফামারীর বিভিন্ন স্থানে এবং পাশের জেলা রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার লালদীঘি এলাকায়।

ঢাকার সাভারে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে সুপারভাইজার হিসাবে কাজ করেন সোনিয়া খাতুন (৩৪)। তিনিও দলবদ্ধভাবেই বাস ভাড়া করে বাড়ি পৌঁছেছেন। এই নারী বলেন, গ্রামের বাড়িতে আমার বাবা-মা ও এক ছোট ভাই আছে। অনেকদিন বাড়িতে আসা হয় না। ১৫ থেকে ২০ জন বান্ধবী মিলে ঢাকার রুটে চলাচলকারী বাস ভাড়া করে ঈদের আগের দিন বাড়ি চলে আসি।  

তিনি জানান, ওই বাসে সব মিলিয়ে ৪০ জন ছিলেন। এখন আবার কর্মস্থলের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছেন। প্রতিদিন গাড়ির ভাড়া ১০ হাজার টাকা। সেই হিসাবে সবাই ভাড়ার টাকা ভাগ করে পরিশোধ করবেন।

বাসের যাত্রী ও চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের সময়ে বাসের চালক ও হেলপার একেকদিন একেকজনের বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া করেন। রাতে ঘুমান বাসের ভেতরে। ঈদে নির্বিঘ্নে আসা ও যাওয়ার জন্য এসব বাস ভাড়া করা হয়। এতে যেমনি স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদে বাড়ি ফেরা যায়, তেমনি ঈদ শেষে কর্মস্থলেও যাওয়া যায়।  

এমন অন্তত ১৫টি বাসের দেখা মিলেছে। এর মধ্যে রাজধানীর দিয়াবাড়ি, উত্তরা, এয়ারপোর্ট, রামপুরা, গুলিস্তান, বাবু বাজার ব্রীজ, কদমতলী, ফুলবাড়িয়া রুটে চলাচলকারী আকাশ এন্টারপ্রাইজ, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের উৎসব, ঠিকানা, বন্ধনসহ বিভিন্ন নামের বাস রয়েছে।

ঢাকার উত্তরা ইপিজেডে কাজ করেন আসমত আলী (৩৭)। তিনি বলেন, আমরা গরিব মানুষ। কাজ করি সংসার চালাই। আমাদের প্রাইভেট কার নেই। তাই কয়েকজন বন্ধু মিলে বাস ভাড়া করে বাড়িতে এসেছি নাড়ির টানে। এই বাসে চড়েই কর্মস্থলে ফিরে যাব। টাকা সামান্য একটু বেশি লাগলেও আরামে যাতায়াত করা যায়। তাই প্রতিবছর ঈদে এভাবে আসি-যাই।  

বাসচালক তমিজ আলম ও রায়হান হোসেন বলেন, ঈদের ছুটি না কাটিয়ে তাদের ঢাকা থেকে নিয়ে আসি আবার নিয়ে যাই। এখানে এসে যে খাতির-যত্ন পাই, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। অনেকটা জামাই আদর পাই। ঢাকা থেকে কেউ যখন গ্রামের বাড়ি আসেন, তখন হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখা যায়। আবার যখন ঢাকায় চলে যান, তখন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আমাদের মনটাও খারাপ হয়ে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০২৫
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ