ঢাকা, সোমবার, ২৪ চৈত্র ১৪৩১, ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কনের বাড়িতে আটক বরপক্ষকে উদ্ধারে গিয়ে অবরুদ্ধ ওসি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২৫
কনের বাড়িতে আটক বরপক্ষকে উদ্ধারে গিয়ে অবরুদ্ধ ওসি

গাইবান্ধা: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বিয়ে বাড়িতে তুচ্ছ ঘটনার জেরে কনের বাড়িতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়া বরপক্ষকে উদ্ধার করতে গিয়ে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হাকিম আজাদ নিজেই অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।  

একপর্যায়ে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং উদ্ধার করা হয় ওসিসহ সংশ্লিষ্টদের।

রোববার (৬ এপ্রিল) দুপুরে সেনাবাহিনীর গাইবান্ধা ক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. ওয়াজেদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) রাতে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপড়হাটী ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপড়হাটী হাজিপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

পরদিন শুক্রবার (৪ এপ্রিল) রাতে কনের বাড়িতে অবরুদ্ধ হওয়া বরপক্ষের লোকজনকে উদ্ধার করতে গিয়ে সুন্দরগঞ্জ থানার ওসিও অবরুদ্ধ হন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, পশ্চিম ছাপড়হাটী হাজিপাড়া গ্রামের প্রবাসী মো. দুখু মিয়ার স্কুলপড়ুয়া মেয়ের সঙ্গে পাশের রামজীবন ইউনিয়নের মো. আয়নাল হকের ছেলে মো. সবুজ সরকারের (২৮) বিয়ে হয়। শুরু থেকেই গেটের টাকা নিয়ে কিছুটা বিরোধ চলছিল। এরপর খাবার পরিবেশনের সময় ভাত নরম হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে বরপক্ষ। একে একে তারা ভাতের প্লেট ছুড়ে ফেলেন, চেয়ার ভাঙচুর করেন।

কনের বাবার অনুপস্থিতিতে অনুষ্ঠান তদারকির দায়িত্বে থাকা কনের চাচা পরিস্থিতি শান্ত করতে গেলে বরপক্ষের লোকজন তাকে মারধর করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে অধিকাংশ বরযাত্রী পালিয়ে যান, তবে বরসহ কয়েকজনকে আটক করেন এলাকাবাসী।

পরদিন শুক্রবার অবরুদ্ধ থাকা লোকজনের পরিবার সুন্দরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে রাতেই ওসি মো. আবদুল হাকিম আজাদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল উদ্ধার অভিযানে যায়। তবে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কনেপক্ষের লোকজন পুলিশের দিকে ঢিল ছুড়তে শুরু করেন এবং একপর্যায়ে ওসিকেও অবরুদ্ধ করে ফেলেন।

পরে তিনি পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন, কিন্তু সেখানেও তাকে ঘিরে রাখেন কনেপক্ষের উত্তেজিত লোকজন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওসিসহ পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করেন।

এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. ওয়াজেদ হোসেন বলেন, ওসি সাহেব ফোন করেছিলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। পরে উত্তিজিত জনতাকে শান্ত করে ওসিসহ সবাইকে উদ্ধার করি।  

সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি মো. আবদুল হাকিম আজাদ বলেন, বিয়ে বাড়িতে বরপক্ষের তিনজন আটকা ছিলেন। তাদের উদ্ধারে গেলে আমাদের লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া হয়। এসময় পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিই। পরে ওই বাড়িটিও ঘিরে ফেলা হয়। একপর্যায়ে সেনাবাহিনীর সহায়তা চাওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২৫
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।