নাটোর: নাটোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক প্রান্তজন পত্রিকার সম্পাদক ও সদর উপজেলার চন্দ্রকলা ডিগ্রি কলেজের যুক্তিবিদ্যা বিষয়ের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক মো. সাজেদুর রহমান সেলিমের দুই হাত ভেঙে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
রোববার (০৬ এপ্রিল) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে চন্দ্রকলা বাজারে হামলার শিকার হন তিনি।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সাজেদুর রহমান সেলিম সদর উপজেলার পন্ডিতগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। তিনি দৈনিক প্রান্তজন পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ক্লাস নেওয়া শেষে সাজেদুর রহমান সেলিম বাড়ি ফেরার জন্য কলেজ থেকে বের হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। এসময় আট/১০ জনের একটি দল তাকে পাশের একটি চায়ের দোকানে ডেকে নিয়ে যায়। তারা তাকে সেখানে থাকা জ্বালানি কাঠ ও সঙ্গে আনা লাঠিসোটা, হকিস্টিক দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে চলে যান।
পরে কলেজের এক সহকর্মী তাকে উদ্ধার করে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে নাটোর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসানসহ অন্য সাংবাদিকরা হাসপাতালে ছুটে যান। তারা দ্রুত হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
নাটোর সদর হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক পলাশ কুমার সাহা বাংলানিউজকে জানান, রোগীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং তার দুই হাত ভেঙে গেছে। তাকে অক্সিজেন দিয়ে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে রাখা হয়েছে।
নাটোর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও যমুনা টিভির বিশেষ প্রতিনিধি নাজমুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, সেলিম একজন অত্যন্ত ভদ্র ও প্রগতিশীল ভাবধারার মানুষ। তিনি স্থানীয় দৈনিক প্রান্তজন পত্রিকা সম্পাদনা করেন। তার ওপর হামলাকারীরা চিহ্নিত হয়েছেন। অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি কলেজের নতুন ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে উত্তেজনা চলছিল।
সেলিম ও তার পরিবারের দাবি, তার ওপর হামলার জন্য স্থানীয় বিএনপি কর্মী আব্দুল ওহাব দায়ী। তারই নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে বিএনপি কর্মী আব্দুল ওহাবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে নাটোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. রহিম নেওয়াজ এ হামলার ঘটনার ব্যাপারে বাংলানিউজকে বলেন, এ ঘটনায় বিএনপির কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনোভাবেই বিএনপি সন্ত্রাসী কার্যক্রমকে প্রশ্রয় দেবে না। যারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহাবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে আহত ব্যক্তির কাছ থেকে ঘটনার বর্ণনা ও হামলাকারীদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করেছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২৫
এসআই