মাদারীপুর: মাদারীপুর জেলার রাজৈরে দ্বিতীয় দিনের মতো একই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবার সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় উভয় পক্ষ একাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, করেছে অগ্নিসংযোগ।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ (এএসপি) একাধিক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এছাড়া আহতের সংখ্যা অন্তত অর্ধশত।
পরে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যৌথভাবে কয়েক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
রোববার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত রাজৈর উপজেলা সদরের বেপারীপাড়া মোড়ে বদরপাশা ও পশ্চিম রাজৈর গ্রামের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় ১০/১২টি দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
জানা গেছে, বাজি ফুটানোর সময় বাধা দেওয়া নিয়ে বিরোধের জের ধরে শনিবার (১২ এপ্রিল) রাতে পশ্চিম রাজৈর ও বদরপাশা দুই গ্রামের মানুষের মধ্যে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ হয়। তাতে অন্তত ১০ পুলিশসহ ২৫ জন আহত হন। একপর্যায়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পরে রোববার দুপুরে দুই পক্ষের লোকজনকে ডাকলে তারা মীমাংসার জন্য রাজি হন।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ১০টায় সালিশে বসার কথা ছিল।
কিন্তু এরই মধ্যে রোববার সন্ধ্যায় উভয়পক্ষের লোকজন ফের দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এসময় বদরপাশা গ্রামের লোকজন বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান ও দোকানে অগ্নিসংযোগ করেন। ১২টি দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট করেন বদরপাশা গ্রামের লোকজন। একপর্যায়ে টিয়ারশেল ছুড়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি শান্ত হয়। এরপর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন রাজৈর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। ঘটনাস্থলে র্যাব মোতায়েন করা হয়।
এ ঘটনায় মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম, রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও কয়েকজন পুলিশ সদস্যসহ উভয়পক্ষের অর্ধশত লোক আহত হন। আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় পশ্চিম রাজৈর গ্রামের মেহেদী মীর (২২), রাসেল শেখ (২৮), সাহাপাড়ার মনোতোষ সাহা (৫০) এবং আলমদস্তারের তাওফিককে (৩৭) রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া অন্যরা রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
রাজৈর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদ খান বলেন, সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
তিনি আরও বলেন, এ নিয়ে চার দফা এ দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ হলো। পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছি। কিন্তু সেই দায়ভার কাউকে দিতে চাই না। আশা করি, সবার সহযোগিতায় এ সমস্যা দ্রুতই সমাধান করতে পারব। আমরা চাই এ ঝামেলা থেকে তারা বের হয়ে আসুক।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২৫
এসআই