ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩২, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বৈশাখী ‘ড্রোন শো’তে উপেক্ষিত ছাত্রদল-মাদরাসার শহীদরা, যা বললেন উপদেষ্টা ফারুকী

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২৫
বৈশাখী ‘ড্রোন শো’তে উপেক্ষিত ছাত্রদল-মাদরাসার শহীদরা, যা বললেন উপদেষ্টা ফারুকী ড্রোন শোতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাঈদ ও অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

ঢাকা: বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ব্যতিক্রমধর্মী ‘ড্রোন শো’, যেখানে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানকে স্মরণ করা হয়। আয়োজনে শহীদ আবু সাঈদ ও মীর মুগ্ধর আত্মত্যাগকে বিশেষভাবে তুলে ধরা হলেও চট্টগ্রামের শহীদ ছাত্রদল নেতা ওয়াসিম আকরামের নাম কোথাও উল্লেখ করা হয়নি।

এতে ক্ষোভ জানিয়েছেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) ফেসবুক স্ট্যাটাসে নাছির লিখেছেন, ‘দুঃখজনকভাবে শহীদ ওয়াসিম আকরামকে স্মরণ করা হয়নি, যিনি আবু সাঈদের সঙ্গে একই সময়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে শহীদ হয়েছিলেন। ’

নাছিরের অভিযোগ, সরকার উদ্দেশ্যমূলকভাবে ওয়াসিম আকরামের আত্মত্যাগ এড়িয়ে যেতে চাইছে।

তবে ছাত্রদলের এই অভিযোগ মানতে নারাজ অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তার দাবি, উপেক্ষিত নয়; আইকনিক ছবি বাছাই করতে গিয়ে ওয়াসিম আকরামসহ আরও অনেক শহীদের ছবি ড্রোন শোতে রাখা যায়নি। স্টোরিংটেলিংয়ের ফ্লো ঠিক রাখা এবং ড্রোন শোতে ছবি রাখার সীমাবদ্ধতাকেও কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন উপদেষ্টা ফারুকী।

সোমবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাসে বিষয়টি নিয়ে সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘এই কয় সপ্তাহের ঝড়ের পর ক্লান্ত শরীরে ঘরে ঢুকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ভাই-বোনদের বিবৃতিটা চোখে পড়লো। হয়তো আমি তাদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে পারতাম। কিন্তু পাবলিক রেকর্ডসের জন্য এখানেই লিখছি।

আজকের ড্রোন শোতে শহীদ ওয়াসিমের ছবি না থাকায় তাদের ব্যথিত হওয়া শতভাগ যৌক্তিক। এই দুঃখ আমারও। যাত্রাবাড়ীর কোনো মাদরাসার ছবি না রাখতে পারার দুঃখও আছে। আরও অনেককে মিস করেছি আমি নিজেও। কিন্তু আইকনিক ইমেজ বাছাই, স্টোরিটেলিংয়ের থিমেটিক ফ্লো ঠিক রাখা এবং বেশি ইমেজ বাছাই করার সুযোগ না থাকাতে এই অবস্থায় পড়েছি আমরা। কিন্তু মনে রাখবেন প্লিজ, আমি শহীদদের দলের ভিত্তিতে ভাগ করে গুরুত্ব বা কম গুরুত্ব দিয়েছি তা না। জুলাইয়ের সব শহীদই সমান। শুধু জুলাই না, এর আগের ষোলো বছরে গুম-খুনের শিকার সবার ত্যাগেই ফ্যাসিবাদের পতন। তারা প্রত্যেকেই আমাদের হিরো। আমার জুলাই-আগস্ট বা ২০১৪-১৫ সালের লেখালেখি পড়ার সুযোগ হলে দেখতে পাবেন আমি কি কি বলার চেষ্টা করেছি।  

আমি শুধু এইটুকু বলবো, আপনারা দয়া করে জুলাই জাদুঘরের দিকে দৃষ্টি রাখবেন। সেখানে আমাদের কালের নির্যাতিত, শহীদ, গুম হয়ে যাওয়া সবাইকে পাবেন, সবার গল্পগুলো পাবেন। যে মানুষদের প্রাণের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা, তাদের আমাদের স্মরণ করতে হবে, তাদের জন্য বেদনায় মন খারাপ হয়ে যেতে হবে। কারণ বেদনা আমাদের মন এবং ইতিহাস দুইটাই পরিশুদ্ধ করে। বেদনা জারি থাকা তাই ভালো। সব শহীদ ও গুম হওয়া মানুষদের প্রতি শ্রদ্ধা। ’

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।