মানিকগঞ্জ: পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রার বাঘের মোটিফের চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষ বলেছেন, আমার যে ক্ষতি হয়েছে, তা অনেক বড় ক্ষতি। আমার পরিবার যেমন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে, তেমনি আমার শিল্পীসত্ত্বাও আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়ার চান্দহরের ঘোষের বাজারের কাছে নিজের বাড়ির উঠানে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, তবু আমি বলতে চাই, এ ঘটনায় যেন নির্দোষ কেউ শাস্তি না পায়, আর যারা প্রকৃতপক্ষে জড়িত, তারা যেন শাস্তি পায়। আমি প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করব, তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করুন।
মানবেন্দ্র ঘোষ বলেন, পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রা আমার প্রাণের উৎসব। যখন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয়/চতুর্থ সেমিস্টারে পড়ি, তখন থেকেই শোভাযাত্রায় চিত্রশিল্পী হিসেবে যুক্ত। আমি কখনো খোঁজ নিইনি, কে আয়োজন করছে-শুধু দেখেছি শিক্ষক, সিনিয়র, জুনিয়র ভাই-বোনেরা এবং সহপাঠীরা একসঙ্গে কাজ করছেন। আমি প্রাপ্তির আশায় নয়, প্রাণের তাগিদে এ শোভাযাত্রায় যাই।
আমি যেমন নিজের ধর্ম পালন করার চেষ্টা করি, তেমনি অন্য ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গেও অনেক সময় একাত্ম হই। সেই প্রাণের জায়গা থেকেই আমি যুক্ত থাকি। কোনো কুৎসা রটানো বা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার কোনো চিন্তাই আমার ছিল না, যোগ করেন তিনি।
রাষ্টের কাছে আপনার কোনো চাওয়া আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি জানি, রাষ্ট্র অনেক বিচক্ষণ। কীভাবে একজন ভেঙে পড়া শিল্পীকে উৎসাহিত ও উজ্জীবিত করা যায়, সে বিষয়ে তাদের ওপর আমি আস্থাশীল।
মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার ইয়াছমিন খাতুন বলেন, এ ঘটনায় আমরা যাদের গ্রেপ্তার করেছি, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত। মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িসহ তাকে নিরাপত্তা দিতে আমরা কাজ করছি।
জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি সরকার গুরুত্ব সহকারে দেখছে। পুড়ে যাওয়া ঘরটি জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পুনর্নির্মাণ করা হবে।
ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা দায়িত্ববোধ থেকে এখানে এসেছি। এ মামলার সঠিক তদন্ত করে মূল অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২৫
এসআই