ঢাকা: গত মার্চ মাসে সারা দেশে ৫৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ৬১২ জন নিহত ও এক হাজার ২৪৬ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবেদন তুলে ধরে হয়। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌপথের দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত মার্চে সারা দেশে সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ৬৪১টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৬৬৪ জন নিহত ও ১ হাজার ২৫৩ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে ৫৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬১২ জন নিহত ও এক হাজার ২৪৬ জন আহত হয়েছে। রেলপথে ৪০টি দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত ও ছয়জন আহত হয়েছে। নৌপথে আটটি দুর্ঘটনায় ১৮ জন
নিহত ও একজন আহত হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, এ সময়ে ২২৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২৫১ জন নিহত ও ২০৮ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩৮ দশমিক ২৭ শতাংশ, নিহতের ৪১ দশমিক এক শতাংশ ও আহতের ১৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
ওই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে ঢাকা বিভাগে ১৪৮টি। এ বিভাগে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫০ জন নিহত ও ৩৬৪ জন আহত হয়েছে। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে বরিশাল বিভাগে, ৩১টি। ওই বিভাগে দুর্ঘটনায় ৩১ জন নিহত ও ৮৬ জন আহত হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে রয়েছেন ২১ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৪৭ জন চালক, ৯৯ জন পথচারী, ৮৫ জন পরিবহন শ্রমিক, ৮১ জন শিক্ষার্থী, ১৪ জন শিক্ষক, ১১৩ জন নারী, ৫৮ জন শিশু, একজন আইনজীবী, একজন সাংবাদিক, একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং ১৩ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী। এদের মধ্যে নিহত হয়েছেন তিনজন পুলিশ সদস্য, তিনজন সেনা সদস্য, দুইজন বিজিবি সদস্য, একজন আইনজীবী, একজন মুক্তিযোদ্ধা, ১২১ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৯৭ জন পথচারী, ৭৪ জন নারী, ৫২ জন শিশু, ৫১ জন শিক্ষার্থী, ২২ জন পরিবহন শ্রমিক, ১৪ জন শিক্ষক ও সাতজন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।
এ সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৯১০টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১১ দশমিক ৮৬ শতাংশ বাস, ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, পাঁচ দশমিক ১৬ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ১০ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, পাঁচ দশমিক ৪৯ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৫১ দশমিক ২৬ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ২২ দশমিক ৫৯ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৭ দশমিক ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, শূন্য দশমিক ১৬ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে, সাত দশমিক ৯২ শতাংশ বিবিধ কারণে এবং শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ ট্রেন-যানবাহনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৩৪ দশমিক ২৩ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩৭ দশমিক ২৬ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার তিন দশমিক ৫৪ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২৫
এসসি/আরআইএস