ঢাকা: ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রূপরেখা প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত সারাদেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট একযোগে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছে ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ’।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ‘একযোগে সকল পলিটেকনিকে শাট ডাউন কর্মসূচি পালন’-এর বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মো. মাশফিক ইসলাম এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘ সাত মাস যাবত আমরা আমাদের আন্দোলন সেদিন রাখার পরও কোনো ফলাফল পায়নি। আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না করে বারবার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। গত ১৬ এপ্রিল চূড়ান্ত কর্মসূচি হিসেবে সারা বাংলাদেশের ব্লকেড কর্মসূচি পালন করি। এরপর আমাদের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু বৈঠকে সংশ্লিষ্ট কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন না। বর্তমান প্রেক্ষাপটে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ আমাদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য একটি রূপরেখা কমিটি গঠন করে দিলেও, এখন পর্যন্ত সেই কমিটির একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই কমিটির কোনো সফলতা আমরা দেখতে পাচ্ছি না বা কোনো তথ্যও পাচ্ছি না। আমাদের দাবি কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তাও জানতে পারছি না, এই কমিটি দ্রুত কাজ করছে না। এই প্রেক্ষিতে আমরা আজকে সারাদেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট একযোগে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করেছি। আমাদের দাবি আদায়ের রূপরেখা প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত সারাদেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট একযোগে এভাবে ‘শাটডাউন’ থাকবে। একইভাবে সব পলিটেকনিকের একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবনসহ সব কার্যক্রম ক্যাম্পাসে বন্ধ থাকবে।
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি হলো-
জুনিয়র ইন্সট্রাকটর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাকটরদের প্রমোশনের হাই কোর্টের রায় বাতিলসহ ক্রাফট ইন্সট্রাকটর পদবি পরিবর্তন এবং ওই মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা; ২০২১ সালের বিতর্কিত ক্রাফট ইন্সট্রাকটর নিয়োগের জন্য নিয়োগবিধি অনতিবিলম্বে বাতিল করা, সুষ্ঠু তদন্তের ভিত্তিতে নিয়োগ বাতিল করা এবং মামলার প্রধান কারিগর ক্রাফট ইন্সট্রাকটরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া; ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চার বছর মেয়াদী অব্যাহত রাখা এবং মানসম্মত সিলেবাস ও কারিকুলাম আধুনিক বিশ্বের আদলে প্রণয়ন করা; উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) পদে ৪ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি (সার্ভেয়িং) হতে পাস করা শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য কেউ আবেদন করতে পারবে না এবং এই পদ সংরক্ষিত করতে হবে; প্রাইভেট সেক্টরে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করা ছাত্রদের ন্যূনতম ১০ম গ্রেডের বেসিক অর্থাৎ ১৬০০০ টাকা দেওয়া; কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিটি প্রকাশ করে কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, উপ-পরিচালক, অধ্যক্ষ ও দায়িত্বে থাকা সকল পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবলকে দায়িত্ব/নিয়োগ দেওয়া; কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের বিতর্কিত সকল নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন এবং কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল সকল শূন্য পদে পলিটেকনিক ও টিএসসিতে দক্ষ শিক্ষক ও দক্ষ ল্যাব সহকারীর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা; ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য আধুনিক বিশ্বের আদলে একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করার গেজেট পাস করতে হবে এবং বর্তমানে প্রস্তাবিত চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (নওগাঁ, ঠাকুরগাঁও, নড়াইল, খাগড়াছড়ি) শতভাগ সিট নিশ্চিত করা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি শাহাদাত আহমেদ, কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি জুবায়ের পাটোয়ারী প্রমুখ।
এমএমআই/এইচএ/