ঢাকা: রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীসহ তিন নারীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এরা হলেন - ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী শিহাবুল ইসলাম (২৪), যাত্রাবাড়ী দনিয়া এ কে স্কুলের প্রিয়ন্তী সরকার (১৪) ও উত্তর বাড্ডার গৃহিণী বিথী আক্তার (১৯)।
মঙ্গলবার (৬ মে) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সোমবার (৫ মে) রাতে পৃথকভাবে তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক একে একে সবাইকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত শিহাবুল ইসলামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামে। বাবার নাম আবু সাঈদ সরকার।
তার বোন উম্মে সায়মা জানান, রাজধানীর ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী শিহাবুল। স্কলারশিপ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পড়ালেখা করতেন তিনি। তবে সম্প্রতি তার পড়ালেখা ভালো যাচ্ছিল না এবং তার স্কলারশিপটি থাকবে না বলে ধারণা করছিলেন তিনি। এই বিষয়টি বোনকেও বলতেন। এই হতাশা থেকে সোমবার রাতে খিলগাঁও নন্দীপাড়া রসূলবাগ এলাকার বাসায় দরজা বন্ধ করে ফ্যানের সঙ্গে রশি পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেন শিহাবুল। কিছুক্ষণ পর পরিবারের সন্দেহ হলে তাকে ডাকাডাকি শুরু করেন। তবে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে এক পর্যায়ে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরবর্তীতে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি তাকে।
এদিকে মৃত প্রিয়ন্তী সরকারের বড় ভাই প্রীতম সরকার জানান, যাত্রাবাড়ী কাজলা মাতব্বর গলিতে তাদের নিজেদের বাড়ি। সেই বাসায় পরিবার নিয়ে থাকেন তারা। যাত্রাবাড়ী দনিয়া এ.কে স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী প্রিয়ন্তী। তবে পড়ালেখা নিয়ে উদাসীন ছিল সে। এজন্য সোমবার রাতে বাবা এবং ভাই তাকে কিছুটা বকাঝকা করেন। এই অভিমান নিয়ে গতকাল রাতে রুমের দরজা বন্ধ করে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয় সে। টের পেয়ে রাত একটার দিকে স্বজনরা দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তবে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
অপরদিকে, উত্তর বাড্ডা আব্দুল্লাহবাগ মোড়ে একটি বাড়ির দ্বিতীয় তলায় স্বামী এবং পরিবারের সঙ্গে থাকতেন বিথী আক্তার। তার স্বামী আসাদুজ্জামান জানান, তার বাড়ি নাটোর আর বিথীর বাড়ি রাজশাহী। গত দেড় বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। তাদের কোনো সন্তান নেই। আব্দুল্লাহবাগের এই বাসায় আসাদুজ্জামানের অসুস্থ বাবাকে অস্ত্রোপচারের পর সেবা করার জন্য গত সপ্তাহে বিথীকে গ্রাম থেকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। সোমবার রাতে পারিবারিক বিষয়াদি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সামান্য ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে গতকাল রাতে রুমের দরজা বন্ধ করে গ্রিলের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেন বিথী। পরবর্তীতে ডাকাডাকি করলেও রুমের দরজা না খোলায় সন্দেহ হলে দরজা ভেঙে তাকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ফারুক জানান, তিনটি মৃতদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনাগুলো সংশ্লিষ্ট থানায় অবগত করা হয়েছে। তারাই বিষয়টি তদন্ত করছে।
এজেডএস/এসএএইচ