ঢাকা, শনিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২, ১০ মে ২০২৫, ১২ জিলকদ ১৪৪৬

জাতীয়

‘মিথ্যাচার’র জবাবে যা বললেন আসিফ নজরুল

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:৩৯, মে ৯, ২০২৫
‘মিথ্যাচার’র জবাবে যা বললেন আসিফ নজরুল আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল

আওয়ামী লীগ আমলের দুইবারের রাষ্ট্রপতি ও জুলাই হত্যা মামলার আসামি আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনার পর আওয়ামী লীগ দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি জোরদার হয়েছে।  

এই প্রেক্ষাপটে সমালোচনার মুখে পড়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে ঘিরে নানান নেতিবাচক ও আক্রমণাত্মক মন্তব্যের ছড়াছড়ি। অনেকে তার পদত্যাগের দাবি করছেন।  

এমন পরিস্থিতির মধ্যে আবদুল হামিদের দেশত্যাগ ও আওয়ামী লীগ বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন ড. আসিফ নজরুল।

শুক্রবার (৯ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে সমালোচনার জবাব দেন তিনি।

এতে আইন উপদেষ্টা বলেন, আমার বিরুদ্ধে কিছু মানুষ জঘন্য মিথ্যাচার ও আক্রমণাত্মক বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করছে। আমি আপনাদের সুস্পষ্টভাবে জানাতে চাই খুনের মামলার আসামি সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশ গমনে বাধা দেওয়ার দায়িত্ব পুলিশ ও গোয়েন্দা এজেন্সিগুলোর, যা কোনোভাবেই আমার আইন মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারভুক্ত বিষয় নয়।  

তিনি বলেন, আমার মন্ত্রণালয়ের অধীনে আছেন নিম্ন আদালতের বিচারকরা। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, আদালতের বিচারকদের দায়িত্ব বিমানবন্দর পাহারা দেওয়া না বা কারো চলাচলে বাধা দেওয়া না। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণের সুযোগ রাখার লক্ষ্যে আইসিটি আইনে সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার বিধান আইন মন্ত্রণালয়ের খসড়ায় ছিল। আইন উপদেষ্টা হিসেবে আমি নিজে এটা উপদেষ্টা পরিষদের সভায় উত্থাপন করেছি। আমার উত্থাপিত খসড়ার আমিই বিরোধিতা করবো এটা কীভাবে সম্ভব? 
‘উপদেষ্টা পরিষদের সভায় কোন উপদেষ্টা কী ভূমিকা রেখেছেন এনিয়ে আমাকে, ছাত্র উপদেষ্টাদের বা অন্য কাউকে দোষারোপ করা থেকে বিরত থাকুন। সেখানে যা সিদ্ধান্ত হয় তার দায় দায়িত্ব আমাদের প্রতিটি উপদেষ্টার। আমাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রশ্নে কোনো দ্বিমত নেই। তবে পদ্ধতি নিয়ে সবার নিজস্ব মত থাকতেই পারে।  

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে আসিফ নজরুল বলেন, আমাদের এটা মনে রাখা প্রয়োজন যে, আইসিটি আইন চাইলেই আমরা কয়েকদিনের মধ্যে সংশোধন করতে পারব। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য সন্ত্রাস দমন আইনসহ অন্য আইনগুলোও আছে। কাজেই আইন কোনো সমস্যা না। রাজনৈতিক দলগুলো আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ চাইলে বা বিচারিক আদালত এ সম্পর্কে কোনো পর্যবেক্ষণ বা রায় এলে অবশ্যই আইনানুগভাবে দ্রুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা যাবে। আমরা সেই প্রত্যাশায় আছি। ইনশা আল্লাহ।

এর আগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হতে পারে, সেই সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন ড. আসিফ নজরুল।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি সমাজে প্রবলভাবে রয়েছে। গণ–অভ্যুত্থানকালে গণহত্যার পরও তাদের মধ্যে অপরাধবোধের অনুপস্থিতি, ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন হীন কর্মকাণ্ড ও পলাতক শেখ হাসিনার চরম উসকানিমূলক বক্তব্য দেখার পর এই দাবি সমাজে আরও সোচ্চারভাবে উচ্চারিত হচ্ছে। তাই আওয়ামী লীগ বা এর কোনো কোনো অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধ করার সম্ভাবনা রয়েছে। ’

প্রসঙ্গত, বুধবার মধ্যরাতে ছেলে ও শ্যালককে নিয়ে দেশত্যাগ করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ খান। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অফিস থেকে ফোনকল পেয়ে তাকে এয়ারপোর্টে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। পতিত সরকারের সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে দেশব্যাপী। আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনের সুযোগ করে দিতেই উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিচারের নামে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে ও খুনের মামলার আসামিদের দেশত্যাগের সুযোগ করা দেওয়া হচ্ছে অভিযোগে ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট দেন নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বিভিন্ন দলের নেতারা। এরই সঙ্গে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জোরদার হয়।  

এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।