ঢাকা, বুধবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২১ মে ২০২৫, ২৩ জিলকদ ১৪৪৬

জাতীয়

চামড়া সংরক্ষণে বিনামূল্যে ৩০ হাজার টন লবণ সরবরাহ করা হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪:৫১, মে ২১, ২০২৫
চামড়া সংরক্ষণে বিনামূল্যে ৩০ হাজার টন লবণ সরবরাহ করা হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সভা করছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: চামড়ার মান ঠিক রাখা এবং যথাযথভাবে সংরক্ষণের জন্য সরকার সারাদেশে ৩০ হাজার টন লবণ বিনামূল্যে সরবরাহ করবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন।

বুধবার (২১ মে) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কোরবানি সম্পর্কিত বিষয়াদির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ কমিটির প্রথম সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, চামড়ার মান রক্ষা ও দীর্ঘমেয়াদি সংরক্ষণের লক্ষ্যে সারাদেশে ৩০ হাজার টন লবণ বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। এসব লবণ বিভিন্ন মসজিদ ও মাদরাসায় দেওয়া হবে। যতদিন না চামড়া ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করা সম্ভব হবে, ততদিন এগুলো সংরক্ষণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা চেষ্টা করছি গতবারের চেয়ে বেশি মূল্যে চামড়ার দাম নির্ধারণ করতে, তবে সেটা অবশ্যই যৌক্তিক হবে। এ বছর যেন কোনো সিন্ডিকেট কাজ করতে না পারে, সেজন্য আমরা মজুদের ওপর জোর দিচ্ছি।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আজকে আমাদের কয়েকটি মৌলিক উদ্দেশ্য ছিল। এর মধ্যে একটি ছিল চামড়ার উপযুক্ত মূল্য নির্ধারণ, যা বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মূল্য নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। কোরবানির পরবর্তী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং কোরবানির পূর্ববর্তী পশু ব্যবস্থাপনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এসব বিষয় পর্যালোচনা করে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সারাদেশের মাদরাসা ও এতিমখানাগুলোয় বিনামূল্যে ৩০ হাজার টন লবণ সরবরাহ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, একই সঙ্গে আমরা একটি প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করছি, যেখানে চামড়া ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণের পদ্ধতি তুলে ধরা হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত উপযুক্ত মূল্য না পাওয়া যায়, ততক্ষণ যেন তারা চামড়া সংরক্ষণ করতে পারেন, সেই বিষয়টিও এতে থাকবে। এর পাশাপাশি সারাদেশে ৫ লাখ লিফলেট বিতরণ করা হবে।

বাজার ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্ধারিত স্থানে যেন কোরবানির হাট বসে এবং তার বাইরে যেন কোনো পশু ক্রয়-বিক্রয় না হয়, সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। পশুর হাটে যে হাসিল নেওয়া হয়, সেটি যেন ৫ শতাংশের নিচে থাকে, সে ব্যাপারেও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সরবরাহ ও চাহিদার ভিত্তিতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা করে কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

শেখ বশির উদ্দিন আরও বলেন, আমাদের বাজার ব্যবস্থাপনা ও মূল্য নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনে কাঁচা চামড়া সরাসরি রপ্তানি করার বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হয়েছে। যদিও আমরা তা চাই না। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন যেন আমরা চামড়ার উপযুক্ত মূল্য নির্ধারণ করতে পারি, যদিও সেটি অনেকাংশে বাজার ব্যবস্থাপনার ওপর নির্ভর করে। আমরা সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করব যেন সঠিক মূল্য নির্ধারণ করা যায়।

বাণিজ্য উপদেষ্টা কমিটির কার্যপরিধি নিয়ে তিনি বলেন, চামড়া সঠিকভাবে সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত লবণ সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, চামড়ার উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করা এবং কোরবানির সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়সমূহের সুষ্ঠু ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থ সংরক্ষণে চামড়া বিক্রয়লব্ধ অর্থ প্রাপ্তি নিশ্চিত করার নির্দেশনা প্রদান, কোরবানির হাট ও পশু পরিবহন, সেইসাথে পরিবহনের সময় পশুর প্রতি নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধে নির্দেশনা জারি করাও এই কমিটির দায়িত্ব। পাশাপাশি সাভার চামড়া শিল্প নগরীসহ সারাদেশে দ্রুত ও যথাযথভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে।

জিসিজি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।