ঢাকা, বুধবার, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২৮ মে ২০২৫, ০০ জিলহজ ১৪৪৬

জাতীয়

অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ

বুধবারের কর্মসূচি স্থগিত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:১১, মে ২৭, ২০২৫
বুধবারের কর্মসূচি স্থগিত

ঢাকা: সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেছে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি। বৈঠকে তাদের দাবিগুলো মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে জানানো হবে।

এই বৈঠকের পর বুধবার (২৮ মে) আন্দোলন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ মে) বেলা পৌনে ৩টায় সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে কমিটির সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বৈঠক হয়।  

বৈঠকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিসংখ্যান বিভাগের সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে বিকেল ৪টায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আলোচনা করেছি। ওনাদের (আন্দোলনকারী) কথাগুলো শুনেছি। আগামীকাল মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে বিষয়গুলো জানাবো।

সিনিয়র সচিব বলেন, গত কয়েকদিন ধরে সচিবালয়ের কর্মচারীরা আন্দোলন করছেন। আজকে সকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে আমাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আলোচনা করার জন্য এবং সমস্যার মূল কোথায় সেটা বের করার জন্য।

তিনি বলেন, আমরা এতক্ষণ আলাপ করেছি। তারা তো আমাদের সাথেই কাজ করেন। সবাই সচিবালয়ের এই কর্মচারী। আইনের ভাষায় আমরাও কর্মচারী। আমরা আমাদের কথা বলেছি, ওনাদের কথা শুনেছি। যেহেতু জিনিসটা (অধ্যাদেশ বাতিল) ওনারা তাড়াতাড়ি চান, আমরা ঠিক করেছি আগামীকাল সকাল ১০টায় আমরা সংশ্লিষ্ট সব সচিব মিলে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে এ কথাগুলো জানাবো। এটাই সিদ্ধান্ত। আর কিছু না। তারপর ওনারা কী করবেন, একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া তো থাকেই। সে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যারা থাকবেন তখন তারা এ বিষয়ে একটা ঘোষণা দেবেন।

কাল তারা আবার কর্মসূচিতে থাকবেন কিনা জানতে চাইলে সিনিয়র সচিব বলেন, আমরা আলাপ করেছি, যে সময়টা আলোচনায় থাকবো সে সময়ে তারা কাজে থাকবেন। তারা আন্দোলন করবেন না। আগামীকাল ওনাদের কর্মসূচি নাই, ওনারা একদিন দেখবেন। যেগুলো ছিল সেগুলো বাতিল করেছেন।

সিনিয়র সচিব বলেন, ওনারা অধ্যাদেশটি বাতিল চেয়েছেন। এ আইন ছাড়াও তো সরকার যেকোনো সময় ব্যবস্থা নিতে পারে।

অধ্যাদেশ বাতিল হবে কিনা-প্রশ্নে তিনি বলেন, যে আইন হয়েছে, সে আইনের সঙ্গে আমরা সংশ্লিষ্ট না। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। সরকার কী করবে, সেটা আমি এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।

বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবীর জানান, আমরা কোনো আংশিক সংশোধন চাই না। পুরোপুরি বাতিল চাই। স্যার আমাদের সঙ্গে পোষণ করে প্রস্তাব দেবেন। শুধু আগামীকাল কর্মসূচি স্থগিত করেছি। আমাদের ধারণা ৬-৭ জন সচিব যদি একসাথে বলেন তাহলে বাতিল হবে।

বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে বসবেন। আশা করি সেখানে ভালো একটা ফল আসবে। আগামীকাল কোনো কর্মসূচি থাকবে না।

এর আগে ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ আকারে প্রণয়ন করা হয়। অধ্যাদেশটিতে চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধুমাত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুতের বিধান রাখা হয়েছে। সেখানে সরকারি কর্মচারীদের আচরণ ও দণ্ড সংক্রান্ত বিশেষ বিধান শিরোনামে একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে সরকারি কোনো কর্মচারী যদি এমন কোনো কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হোন, যার কারণে অন্য যেকোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে আনুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে অন্যান্য কর্মচারীদের সঙ্গে সমবেতভাবে বা এককভাবে ছুটি ছাড়া বা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া নিজ কর্মে অনুপস্থিত থাকেন বা বিরত থাকেন বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হোন, অন্য যে কোনো কর্মচারীকে তার কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকতে বা বিরত থাকতে বা তার কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানি দেন বা প্ররোচিত করেন, যে কোনো সরকারি কর্মচারীকে তার কর্মে উপস্থিত হতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন তাহলে তিনি অসদাচরণের দায়ে দণ্ডিত হবেন।

এমআইএইচ/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।