ঢাকা, শনিবার, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০৭ জুন ২০২৫, ১০ জিলহজ ১৪৪৬

জাতীয়

এবার দেরিতে নামছে হাঁড়িভাঙা, বাজারে আসবে জুনের শেষে

ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯:১০, জুন ৪, ২০২৫
এবার দেরিতে নামছে হাঁড়িভাঙা, বাজারে আসবে জুনের শেষে ছবি: বাংলানিউজ

নীলফামারী: এ বছর দেরিতে মুকুল আসায় নির্দিষ্ট সময়ে বাজারে আসছে না রংপুরের বিখ্যাত হাঁড়িভাঙা আম।

সাধারণত ডিসেম্বরের শেষ থেকে জানুয়ারির প্রথম দিকে এই আমের মুকুল দেখা গেলেও এবার হাঁড়িভাঙা আমের মুকুল এসেছে ফেব্রুয়ারিতে।

বর্তমানে আমের বয়স প্রায় চার মাস। প্রতিবছর হাঁড়িভাঙা আম জুনের ২০ তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারে আসার কথা থাকলেও এবার তা দেড় থেকে দুই সপ্তাহ পিছিয়ে যাবে-এমনটি জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

আম চাষিরা জানান, জুনের শেষ নয়তো জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে বাজারে মিলবে পাকা হাঁড়িভাঙা আম। এর আগে বাজারে হাঁড়িভাঙা আম পাওয়া গেলেও তা অপরিপক্ব থাকবে। এ আম দেরিতে নামলেও হাঁড়িভাঙার মতো দেখতে আমকে হাঁড়িভাঙা বলে বিক্রির চেষ্টা করছেন কিছু বিক্রেতা। ফলে ক্রেতারা প্রতারিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

রংপুরের বদরগঞ্জ এলাকার রামনাথপুর, গোপীনাথপুর, বিষ্ণুপুর, কালুপাড়া ইত্যাদি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি আমবাগানে এবার ফলন কম হয়েছে। আকারে ছোট হয়েছে আম। টানা তাপপ্রবাহে অকালে ঝরে পড়েছে হাঁড়িভাঙা আমের গুটি। বৈরী আবহাওয়ায় আমের আকার ছোট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন আমচাষিরা।

আমচাষিদের ভাষ্য, আমের মুকুল আসার সময় পৌষ-মাঘ মাসে বৃষ্টি হওয়ায় বাগানের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তার ওপর টানা খরা ও তাপপ্রবাহে আমগাছে পোকার আক্রমণ হয়েছে। ফলে ঝরে পড়েছে আমের গুটি। পোকা দমনে কীটনাশক ও সেচ দিয়েও খুব একটা কাজ হয়নি। ফলে আম উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আমবাগানের মালিকরা জানান, ইতিমধ্যে দূর-দূরান্তের পাইকাররা আসতে শুরু করেছেন। তারা দরদাম করে আগাম বাগান কিনছেন।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে রংপুরের হাঁড়িভাঙা আম। বিষমুক্ত ও অতি সুমিষ্ট আঁশবিহীন হাঁড়িভাঙা আমের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। বেশ কয়েক বছর ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় এ আম বাগানের বিস্তৃতি ঘটেছে। রংপুর সদর, মিঠাপুকুর, বদরগঞ্জ, নীলফামারী, লালমনিরহাট, পার্বতীপুর প্রভৃতি এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে এ আমের বাগান।

বিশ্ববিখ্যাত এ হাঁড়িভাঙা আমের উৎপত্তি রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়ন থেকে। আমটির গোড়াপত্তন করেছিলেন নফল উদ্দিন পাইকার নামের এক বৃক্ষবিলাসী মানুষ। শুরুতে এর নাম ছিল মালদিয়া। আমগাছটির নিচে তিনি মাটির হাঁড়ি দিয়ে ফিল্টার বানিয়ে পানি দিতেন। একদিন রাতে কে বা কারা ওই মাটির হাঁড়িটি ভেঙে ফেলে। পরে ওই গাছে বিপুল পরিমাণ আম ধরে। সেগুলো ছিল খুবই সুস্বাদু। সেগুলো বিক্রির জন্য বাজারে নিয়ে গেলে লোকজন ওই আম সম্পর্কে জানতে চায়। তখন চাষি নফল উদ্দিন মানুষকে বলেন, যে গাছের নিচের হাঁড়িটা মানুষ ভেঙেছিল, সেই গাছেরই আম এগুলো। তখন থেকেই ওই গাছটির আম হাঁড়িভাঙা আম নামে পরিচিতি পায়। বর্তমানে রংপুরের হাঁড়িভাঙা আমের মাতৃগাছটির বয়স ৬৩ বছর।

এসআই/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ