ঢাকা, সোমবার, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০৯ জুন ২০২৫, ১২ জিলহজ ১৪৪৬

জাতীয়

ঈদুল আজহার তৃতীয় দিনেও ফাঁকা রাজধানীর সড়ক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:৫৫, জুন ৯, ২০২৫
ঈদুল আজহার তৃতীয় দিনেও ফাঁকা রাজধানীর সড়ক ঈদুল আজহার তৃতীয় দিনেও ফাঁকা রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বর।

ঢাকা: ঈদুল আজহার দুই দিন পেরিয়ে গেলেও তৃতীয় দিনে রাজধানীর সড়কগুলো এখনও অনেকটাই ফাঁকা।

সোমবার (৯ জুন) সরেজমিনে রাজধানীর মতিঝিল, শাহবাগ, মিরপুর, বাংলামোটর, ফার্মগেট, বিজয় সরণি এবং কুড়িলসহ বিভিন্ন ব্যস্ততম সড়ক ঘুরে দেখা যায়, ঈদের ছুটির রেশ ধরে অধিকাংশ মানুষ এখনও ঢাকার বাইরে অবস্থান করায় চিরচেনা যানজটের নগরী ঢাকা পরিণত হয়েছে এক শান্ত, নিরিবিলি শহরে।

কয়েকজন পরিবহন চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফাঁকা সড়কে গাড়ি চালাতে পেরে তারা অনেকটাই স্বস্তিতে আছেন। তবে যাত্রী স্বল্পতার কারণে তাদের আয় কমে গেছে।

শাহবাগে অপেক্ষারত শেকড় পরিবহনের বাসচালক আব্দুল হাই জানান, ঈদের সময়টায় এমনিতেই যাত্রী কম থাকে। তার ওপর এবার ঈদের তৃতীয় দিনেও শহরের রাস্তাঘাট একেবারেই ফাঁকা। যে দুয়েকজন যাত্রী পাচ্ছি, তাদের নিয়েই গাড়ি চালাতে হচ্ছে।

অন্যদিকে, বাংলামোটরে অপেক্ষমাণ সিএনজিচালিত অটো রিকশাচালক কামাল হোসেন বলেন, সাধারণত ঈদের সময় অনেকেই জরুরি প্রয়োজনে সিএনজি ব্যবহার করেন। কিন্তু এবার যাত্রী পাওয়া খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। সারাদিনে যা আয় হচ্ছে, তা দিয়ে গাড়ির ভাড়া আর তেলের খরচ উঠানোই মুশকিল।

এদিকে রাজধানীর অলিগলিতে রিকশাচালকদের অবস্থাও প্রায় একইরকম। যাত্রী না থাকায় রিকশাচালকদের অনেকেই অলস সময় পার করছেন। শাহবাগে রিকশা নিয়ে অপেক্ষারত চালক সুমন মিয়া জানান, ঈদের আগে ভালো আয় হয়েছিল। কিন্তু ঈদের পর থেকে যাত্রী নেই বললেই চলে। পেটের তাগিদে রিকশা নিয়ে বের হয়েছি, কিন্তু যাত্রী কই?।

ফাঁকা সড়কের কারণে সাধারণ যাত্রী ও পথচারীরা স্বস্তিতে যাতায়াত করতে পারছেন।

ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারকারী যুবায়ের আহমেদ বলেন, প্রতি বছর ঈদের সময় ঢাকার ফাঁকা রাস্তা দেখে মনটা জুড়িয়ে যায়। তাই ঈদের ছুটিতে বন্ধু ও পরিবার নিয়ে গাড়িতে ঘুরে বেড়াই। উত্তরা থেকে শাহবাগ মাত্র ২০ মিনিটে পৌঁছাতে পেরেছি। জ্যাম ছাড়া এত দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে, ভাবিনি।

ফার্মগেটে পথচারী সীমা আক্তারের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ঈদের ছুটির মধ্যে রাস্তাঘাট ফাঁকা দেখে ভালো লাগছে। তাড়াহুড়ো নেই, ধাক্কাধাক্কি নেই। শান্ত পরিবেশে হেঁটে যাওয়া যাচ্ছে।

রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরাও ফাঁকা সড়কের কারণে অনেকটাই নির্ভার। তবে তাদের কাজের চাপ কমলেও সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে।

বিজয় সরণি মোড়ে দায়িত্বরত এক ট্রাফিক সার্জেন্ট জানান, সাধারণত ঈদের সময় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যায়, কারণ ফাঁকা রাস্তায় অনেকেই বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালায়। আমরা সেদিকে নজর রাখছি এবং চালকদের সতর্ক করছি।

তিনি আরও বলেন, ঈদের চতুর্থ দিন থেকে হয়তো মানুষ ঢাকায় ফিরতে শুরু করবে। তখন যানজট আবার বাড়বে। আমরা সেটার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।

এদিকে ঈদুল আজহার ছুটিতে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট খুলতে শুরু করলেও ক্রেতার সংখ্যা এখনও আশানুরূপ নয়। সবকিছু স্বাভাবিক হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।