ঢাকা: ইরানে ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে আজ রাজধানী ঢাকায় জুম্মার নামাজের পর র্যালি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২০ জুন) র্যালিটি রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেন্ট্রাল মসজিদের সামনে থেকে কলাভবন, শ্যাডো এবং মলচত্বর অতিক্রম করে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে পৌঁছায়।
সাধারণ শিক্ষার্থী এবং শান্তি ও ঐক্যকামী নাগরিকদের আহ্বানে এ প্রতিবাদ সমাবেশ ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল মসজিদ থেকে বের হওয়া ইরানের ওপর সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ এবং মানবতা ও উম্মাহর ঐক্যের পথ মিছিল আয়োজিত হয়েছে যাতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা এবং বয়সের মানুষ অংশ গ্রহণ করেন। ঐক্য ও সংহতি মিছিলটি কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাস ঘুরে রাজু ভাস্কর্যে পৌঁছে। সেখানে বক্তব্য দেন আল কুদস কমিটি বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা তারেকুল হাসান।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিভিন্ন বয়সী, মত ও পেশার মানুষ উপস্থিত হন এবং মুহুর্মুহু স্লোগান এবং আল্লাহু আকবর তাকবীরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসকে প্রকম্পিত করেন। কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি কলাভবন, শ্যাডো এবং মলচত্বর অতিক্রম করে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে পৌঁছায়।
ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের সদস্যসচিব মোহাম্মদ হিজবুল্লাহ, বিশেষজ্ঞ ইসলামী অর্থচিন্তাবিদ মোহাইমিন পাটোয়ারী, ডিরেক্টর, গবেষক এবং অ্যাক্টিভিস্ট নুরে আলম মাসুদ।
আল কুদস কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা তারেকুল হাসান বলেন, আমেরিকা যদি ইরানকে আক্রমণ করে তবে তার জবাব দেওয়ার জন্য তেহরান প্রস্তুত আছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের আপামর জনগণ এ লড়াইতে নৈতিকভাবে ইরানের সঙ্গেই আছে। তাদের এবং ফিলিস্তিনের মজলুমদের জন্যে আমাদের নিরন্তর দোয়া।
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আলী খামেনীর উক্তিটি আমাদের সামনে তুলে ধরেন, ‘আমার শরীরের দাম নেই, ইরানের দাম নেই। দাম রয়েছে ইসলামের’ উদ্ধৃত করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ইরানকে পূর্ণাঙ্গ শক্তিতে দেখতে চাই। ইসলামের পতাকাকে উড্ডীন রাখার জন্য ইরান তার সব শক্তি দিয়ে ইসরায়েলকে প্রতিহত করবে, ইনশাআল্লাহ।
ইউনাইটেড ফর বাংলাদেশের সদস্যসচিব মোহাম্মদ হিজবুল্লাহ বলেন, ‘এই লড়াইতে ইরান একা। সারা দুনিয়ার বুকে এক ইরানই লড়াই করে যাচ্ছে। আমরা ইরানের সঙ্গে আছি। ইরানের সঙ্গে এবং গাজার মজলুম জনগণের সঙ্গে সংহতি জানাচ্ছি।
রাজু ভাস্কর্যে আয়োজিত সমাবেশে, মুসলিম বিন হাই বলেন, ইরান যেকোনো ধরনের সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে মোকাবিলা করার প্রস্তুতি আগেই নিয়ে রেখেছিল। আর, আরবের অন্যান্য রাষ্ট্রগুলো এখনো আমেরিকার পা চাটা নীতিতে অটল রয়েছে।
ইরানের মাদ্রাসা আজ জাহরাতে অধ্যয়নরত নারী শিক্ষার্থী মাহমুদা সুমাইয়া বুশরা বলেন, ‘আজ এখানে একজন মুসলিম হিসেবে ইরানকে সংহতি জানাতে, ফিলিস্তিনের পক্ষে নিজের মানবিক ও ইমানি দায়িত্ব থেকে অবস্থান করেছি। নিঃসন্দেহে ইসরায়েলের পতন খুব নিকটে কারণ ইসরায়েল ভুল ব্যক্তির সঙ্গে শত্রুতা করছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা সাহসী নেতা সৈয়দ আলী খামেনায়ী (হা.) ইমাম হুসাইন এর শিক্ষায় শিক্ষিত তাই আমরা কেবল শক্তির জোরে নয়, ইমান এবং শাহাতের জোরে ইসলামের বিজয় নিশ্চিত করব এবং ফিলিস্তিনকে মুক্ত করব বলে বিশ্বাসী, ইনশাআল্লাহ! আমি একজন ক্ষুদ্র মুসলিম নাগরিক হিসেবে পুরো বাংলাদেশবাসী এবং বিশ্ববাসীকে ইরান কে সহযোগিতা এবং ফিলিস্তিনকে মুক্ত করার এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানাচ্ছি। নিঃসন্দেহে শিয়া-সুন্নির বিদ্বেষ হচ্ছে ইহুদিদের চক্রান্ত তাই ফাঁদ থেকে বাঁচতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মুসলিম উম্মাহর ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সর্বোচ্চ সময় এটাই।
টিআর/আরআইএস
