পণ্য চোরাচালানে জড়িত এক ভারতীয় নাগরিককে নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে, এমন গুজবের ভিত্তিহীনতা উন্মোচন করেছে গুজব প্রতিরোধে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ফ্যাক্টওয়াচ।
ফেসবুকে সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, হুইলচেয়ারে বসা এক ব্যক্তির দেহে লুকিয়ে রাখা পণ্য জব্দ করছে কাস্টমস সদস্যরা।
তবে ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে ভিডিওর ব্যক্তি বাংলাদেশি নন, বরং ভারতীয় নাগরিক নজরুল হক। তিনি গত ১৭ মার্চ কলকাতা থেকে ঢাকায় আসেন ইন্ডিগোর একটি ফ্লাইটে। নিজেকে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগী হিসেবে পরিচয় দিয়ে হুইলচেয়ারে চড়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগের চেষ্টা করেন তিনি।
কিন্তু কাস্টমস হাউস, ঢাকার প্রিভেন্টিভ দল সন্দেহবশত তার দেহ তল্লাশি চালিয়ে কৌশলে লুকানো ২০ কেজি কসমেটিকস, ৪ লিটার মদ, ৩টি মোবাইল ফোন এবং ৭ পিস কাপড় জব্দ করে। এ সময়ই ঘটনাস্থলে ভিডিওটি ধারণ করা হয়, যা পরে বিকৃত ব্যাখ্যাসহ ভাইরাল হয়।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান টিম একাধিক গণমাধ্যম প্রতিবেদন ও ছবি বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হয়, নজরুল হক ‘জুলাই অভ্যুত্থানে আহত’ কেউ নন, বরং চোরাচালান চক্রের সঙ্গে যুক্ত এক ভারতীয় নাগরিক। তাকে প্রাথমিকভাবে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হলেও, তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ চলমান।
প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, নজরুল হকের গ্রেপ্তারসংক্রান্ত ভিডিও এবং ছবি ব্যবহার করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মিথ্যা প্রচার চালানো হচ্ছে। এসব পোস্টকে ‘ভুয়া’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে ফ্যাক্টওয়াচ।
প্রতিষ্ঠানটি সতর্ক করে বলেছে, দেশ-বিদেশের একটি মহল পরিকল্পিতভাবে গুজব, বিভ্রান্তিকর তথ্য ও অপপ্রচার ছড়িয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে চাইছে।
শুধু এপ্রিল মাসেই ফ্যাক্টওয়াচ অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ২৯৬টি ভুয়া তথ্য শনাক্ত করেছে। তাদের দাবি, ২০২৪ সাল থেকে ভারতীয় গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রবণতা বেড়েছে।
এমইউএম/এমজে