ঢাকা: ব্রিটিশ আমল। অফিস আদালতে সব কিছু হতো ইংরেজি আর ফার্সিতে।
রাজশাহী অঞ্চলের পাবনা মহকুমায় ১৮৬৭, ১৮৭০ এবং ১৯০৮ সালের ৩টি রায় বুধবার (১৪ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের জাদুঘরে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ফার্সি ও ইংরেজি রায়ও রয়েছে।
মামলার ফাইলের প্রথম পৃষ্ঠায় লেখা রয়েছে, ফার্স্ট সাব-জজ পাবনা। ইয়ারস অব ডিসিশন ১৮৬৭। নালিশ উপস্থিতির তারিখ ১৬ জুলাই ১৯৬৬। বাদী হিসেবে নাটোরের রুদ্র কান্ত লাহিড়ী নামে এক ব্যক্তির নাম উল্লেখ রয়েছে। উকিল দুজনের নামও উল্লেখ আছে, পরে রয়েছে প্রতিবাদীগণের নাম।
পরের মামলাটি ১৮৭০ সালের। সেটাও পাবনা মহকুমার। এটার রায় হয়েছে ১৮৭১ সালে। ১৯০৮ সালের ৭৭ নং মামলা এটা, রয়েছে ফার্সিতে।
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার এসএম কুদ্দুস জামান নথিগুলো প্রসঙ্গে বলেন, ১৮৬৭, ১৮৭১ এবং ১৯০৮ সালে বাংলা, ইংরেজি ও ফার্সিতে লেখা তিনটি মামলার নথি রয়েছে।
সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের মতে, উচ্চ আদালতে বাংলা প্রচলনের ক্ষেত্রে বিচারপতি এআরএম আমিরুল ইসলাম চৌধুরী হচ্ছেন পথিকৃৎ। তিনি সর্বপ্রথম সকল আদেশ নির্দেশ ও রায় বাংলায় দেওয়া শুরু করেন।
আর ২০০৭ সাল থেকে এবিএম খায়রুল হক নিজেই বাংলায় রায় দেয়া শুরু করেন। হাইকোর্ট বিভাগে প্রায় দেড়শতাধিক রায় দেন তিনি। সর্বশেষ আপিল বিভাগে তিনি ত্রয়োদশ সংশোধী অবৈধ বলে দেওয়া রায়টিও বাংলায় দেন।
২০১৪ সালের ২৭ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট জাদুঘর উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের সময় তালপাতায় লেখা রায় স্থান পায় জাদুঘরে। যেটা ৩০৪ বছর আগে ১৭১০ সালের একটি মামলার রায়। ওই রায় লেখা হয়েছে তালপাতায়। সংস্কৃত ভাষায় লেখা ওই রায়ের কপি সংগ্রহ করা হয়েছে পটুয়াখালী জেলা জজ আদালত থেকে।
রয়েছে, ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার কার্যবিবরণীর (সাত খণ্ড) দলিল। জাদুঘরে স্থান পেয়েছে ভারত বিভাগের পর পাকিস্তান (প্রভিশনাল সংবিধান) আদেশ ১৯৪৭ বলে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হওয়া হাইকোর্টে ব্যবহৃত বেশ কিছু সামগ্রী ও নথি। ঢাকা হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি কর্তৃক ব্যবহৃত পদমর্যাদাসূচক টুপি, পুরাতন টাইপরাইটার, দেয়াল ঘড়ি, পিতলের ট্রফি, চেয়ার, টেবিল, ড্রেসিং টেবিল, দাঁড়িপাল্লা ও বাটখারা, কলম ও নিব, রেপ্লিকা ইত্যাদি।
বাংলাদেশ সময়: ০১৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৫