ঢাকা: ‘বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস’ বৃহস্পতিবার (০৩ ডিসেম্বর)। প্রতিবন্ধীদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে দিবসটি পালনে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
প্রতিবন্ধীরা যাতে সমাজে অবহেলিত না থাকে সেজন্য বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এবার দাবি উঠেছে- ‘একীভূতকরণঃ সক্ষমতার ভিত্তিতে সকল প্রতিবন্ধী মানুষের ক্ষমতায়ন। ’
অর্থাৎ প্রতিবন্ধীদের মানসিক স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, একীভূত শিক্ষা, ভোটাধিকার ও প্রতিনিধিত্ব, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, গণপরিবহনে আসন সংরক্ষণ, প্রবেশগম্যতা ও চলাচল, কর্মক্ষেত্রে ন্যায্যতা, নিরাপদ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা।
এ বিষয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব তারিক-উল-ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, দেশে প্রতিবন্ধী মানুষের সংখ্যা এক কোটি ৬০ লাখ। এদের সাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলতে ৭২টি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৪৫ লাখ প্রতিবন্ধীকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রশিক্ষণ শেষে প্রতিবন্ধীদের মধ্য থেকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে ২০ লাখের। যারা আত্মকর্মসংস্থানে এগিয়ে এসেছে তাদের স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষের মতোই তাদের বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে।
সচিব বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ প্রতিবন্ধী। আর এই ১৫ শতাংশের অর্ধেক নারী। তাদেরও কাজ করার সুযোগ আছে। আমরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। দেশের প্রায় ২০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আছে যারা প্রতিবন্ধীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এর মধ্যে ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করা হয়েছে প্রতিবন্ধীদের জন্য। এছাড়া ৬০টি ভ্যান গাড়ির মাধ্যমে বেকারদের এক মাস করে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে এবং এর সুফল পাচ্ছেন প্রতিবন্ধীরাও।
তিনি জানান, প্রতিবন্ধীদের নাম রেজিস্ট্রেশন করার জন্য জরিপ চলছে। এরপর তাদের পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। এছাড়া আগে ৪ লাখ প্রতিবন্ধীকে ভাতা দেওয়া হলেও এখন দেওয়া হচ্ছে ৬ লাখ জনকে। মাসিক ভাতার পরিমাণ ৫শ টাকা বাড়ানো হবে।
প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে অ্যাকশন অন ডিজ্যাবিলিটি অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (এডিডি) ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ। এডিডির কান্ট্রি ডিরেক্টর মো.শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, তারা বাংলাদেশে ১৯৯৫ সাল থেকে প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী নারীদের অধিকার ও তাদের সার্বিক উন্নয়নের জন্য তারা বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় সমাজে নারীর প্রতি মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষে বিশেষ কার্যক্রম ‘মর্যাদায় গড়ি সমতা’ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৬২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৫
এসএস/এসআর