বরগুনা: বরগুনায় একটি কোচিং সেন্টারে ইসরাত জাহান মালিহা (৯) নামে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে বেত দিয়ে পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করেছে ওই কোচিং সেন্টারের পরিচালক জহিরুল ইসলাম বাদল।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত ও কোচিং সেন্টারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে বরগুনা পৌর শহরের কলেজ রোড এলাকায় বিজয় বৃত্তি কোচিং সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।
শিশু মালিহাকে অসুস্থ অবস্থায় বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মালিহা ক্যালিক্স একাডেমির তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী।
মালিহার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক এবং বরগুনা সদর উপজেলার রোডপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জহিরুল ইসলাম বাদলকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে শিক্ষা বিভাগ। এছাড়া শহরের কলেজ রোডে পরিচালিত কোচিং সেন্টারটিও বন্ধ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক বাদল আত্মগোপনে রয়েছে। তবে তাকে না পেয়ে শিক্ষক বাদলের স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ।
শিশু মালিহা বাংলানিউজকে বলে, স্যার আমাকে একটি অংক করতে দিয়েছিলো, আমি পারি নাই, সেজন্য আমাকে বেত দিয়া পিটাইছে।
শিক্ষার্থী মালিহার বাবা মো. জামাল শিকদার বাংলানিউজকে বলেন, সামান্য অপরাধের জন্য আমার মেয়েকে ৩৫ থেকে ৪০টি বেত্রাঘাত করা হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
অভিযুক্ত শিক্ষক জহিরুল ইসলাম বাদলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি নির্যাতনের কথা স্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, আমি খুবই অন্যায় করে ফেলেছি, এজন্য আমি ভীষণ লজ্জিত, জীবনে আর কখনো এমনটা হবেনা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল মজিদ বাংলানিউজকে বলেন, এ ঘটনায় শিক্ষক জহিরুল ইসলাম বাদলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে বরগুনার পুলিশ সুপার বিজয় বসাক ঘটনার পর পরই বৃহস্পতিবার রাতে শিক্ষার্থী মালিহাকে নিয়ে নিজে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা করান।
এ সময় পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের বলেন, শিশু নির্যাতন একটি মারাত্মক অপরাধ। তাই এ বিষয়ে সব রকম আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. জোহানুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, শিশুটির শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বেত্রাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বরগুনার জেলা প্রশাসক মীর জহুরুল ইসলাম শুক্রবার সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থী মালিহাকে দেখতে যান। এ সময় তিনি বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষকের পরিচালিত কোচিং সেন্টারটি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।
উক্ত কোচিং সেন্টারটি সম্প্রতি প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত সিলগালা করে দিয়েছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে বিভিন্ন মহলের তদবিরে পুনরায় চালু করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৩ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৫
আরএ