ঢাকা: পদ্মা সেতুর মূল পাইলিং এখন কেবল সময়ের অপেক্ষায়। মাওয়া ঘাটের অদূরে সাত নম্বর পিলার ঘিরে প্রস্তুতির এতটুকুনও কমতি নেই।
মেজর ব্রিজের প্রকৌশলীরা জানাচ্ছেন, নতুন চারটি ফ্লোটিং ক্রেন গভীর সমুদ্রে সাবমারজিবল জাহাজের ওপর থেকে আনলোড করা হয়েছে। শনিবার (৫ ডিসেম্বর) এগুলো পদ্মার মাওয়া ঘাটে এসে পৌঁছাবে।
পদ্মা সেতু প্রকল্প সূত্র জানিয়েছে, মূল ব্রিজের কাজে নিয়োজিত রয়েছে ৯২টি ক্রেন এবং নদীশাসনের কাজে যুক্ত রয়েছে ৪৫টি ক্রেন ও ড্রেজার মেশিন।
১২ ডিসেম্বর মাওয়া ঘাটে সেতুর পাইলিংয়ের ফলক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর সঙ্গে সঙ্গেই হ্যামার দিয়ে শুরু হবে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর পাইলিংয়ের কাজ।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের প্রধান ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, নদীর গভীরতম স্থানে পাইল নিয়ে যেতে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী হ্যামার ব্যবহৃত হবে।
তিনি জানান, পদ্মা সেতুর তলদেশের কাদামাটি খুবই দুর্বল। এগুলো পলিমাটি। এর ১০ কিলোমিটার তলদেশে পাথরের স্তর। তলদেশের পলিমাটি হঠাৎ সরে গিয়ে ২০০ মিটার খাদ তৈরি হতে পারে। তাই ৪০০ মিটার গভীরে নিয়ে যাওয়া হবে পাইল। এত পাইল আর কোনো সেতুতে ব্যবহারের নমুনা নেই।
এদিকে, চীন থেকে নিয়ে আসা পাইল প্লেট পদ্মার পাড়ে ফেব্রিকেশন ইয়ার্ডে পাইল আকারে তৈরি হচ্ছে। সম্প্রতি সরেজমিনে ফেব্রিকেশন ইয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, পেছন দিক থেকে প্লেট মেশিনে ঢুকছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। এরপর গোলাকার হয়ে পাইল আকারে তা রেললাইন ধরে গিয়ে নদীতীরে জমা হচ্ছে। প্রত্যেকটি পাইল ৩শ’ ফুট লম্বা, আর এর ব্যস (ডায়া) হচ্ছে ১০ ফুট। আর পাইলগুলো তৈরি করা হচ্ছে ৫০ মিলিমিটার পুরু স্টিলের শিট দিয়ে।
৪২টি পিলারের উপর দাঁড়িয়ে থাকবে ছয় কিলোমিটারের বেশি লম্বা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই সেতু। এছাড়া দেড় কিলোমিটার করে উভয়পাড়ে তিন কিলোমিটার সংযোগ সেতুর জন্য আরও ২৪টি পিলার হবে।
সেতুর ৪২টি পিলারে ছয়টি করে ২৪০টি এবং দু‘পাড়ের ১২টিতে দু’টি করে ২৪টি পাইল বসানো হবে। সর্বমোট ২৬৪টি পাইল বসবে।
বাংলাদেশ সময়: ০০১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০১৫
এসএ/এইচএ