রাজশাহী: অগ্রহায়ণের শেষের দিকে রাজশাহী অঞ্চলে পড়তে শুরু করেছে শীত। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সন্ধ্যার পর পড়ছে কুয়াশা।
ভোরে ঘন কুয়াশা আর সকালে আকাশে মেঘ থাকায় রোববার (০৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টা পর্যন্ত দেখা মেলেনি সূর্য মামার।
দুপুরের পর সূর্যের মুখ দেখা গেলেও উত্তাপ ছড়ায়নি। হিমলায় ছুঁয়ে আসা উত্তরের শীতল বাতাস প্রথমবারের মত জানান দিয়েছে শীত আসছে। আবহাওয়াবিদরাও বলছেন, এটা শীতের পদধ্বনি। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহেই উত্তরাঞ্চলে জেঁকে বসতে পারে শীত। বয়ে যেতে পারে মৃদু শৈত্য প্রবাহ।
রাজশাহী আবহাওয়া অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত আবহাওয়া কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বাংলানিউজকে জানান, চলতি ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত রাজশাহী অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ থাকবে অনেকটাই স্বাভাবিক। এর মধ্যে ডিসেম্বর রাজশাহীতে ১১ মিলিমিটার, জানুয়ারিতে ৯ মিলিমিটার এবং ফেব্রুয়ারি মাসে ১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী ডিসেম্বরের শেষ দিকে রাজশাহী অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঘন কুয়াশাসহ মৃদু থেকে মাঝারি আকারের দুটি শৈত্য প্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তাতে এ অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নামতে পারে ৮ থেকে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর জানুয়ারিতে বয়ে যেতে পারে মাঝারি থেকে তীব্র শৈত্য প্রবাহ। সে সময় সর্বনিস্ন তাপমাত্রা নেমে যেতে পারে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে।
রাজশাহী আবহাওয়া অধিদফতরের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক লতিফা বেগম বাংলনিউজকে জানান, রোববার রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সকাল ৬টায় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৮ শতাংশ এবং দুপুর ১২টায় ৭৬ শতাংশ। এর আগে চলতি মৌসুমের তাপমাত্রা নামতে শুরু করে ৩ ডিসেম্বর থেকে। এদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পর দিন ৪ ডিসেম্বর ছিল ১৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই তুলনায় আজ তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু ভোরে ঘন কুয়াশা এবং সকালে আকাশে মেঘ থাকায় শীত অনুভূত হয়েছে।
শীত পড়তে শুরু করায় মহানগরীসহ রাজশাহী অঞ্চলের হাট-বাজারে গরম কাপড়ের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। প্রতিদিনই মহানগরীর ফুটপাতে নিম্ন আয়ের লোকজন ভিড় জমাচ্ছেন।
এদিকে, ডিসেম্বরের শুরুতে রাজশাহী অঞ্চলে শীত পড়তে শুরু করায় সর্দি-জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক (ইএমও) ড. বাবুল আক্তার।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এক সপ্তাহ ধরে সর্দি-জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে বেশি আসছেন। গরম থেকে ঠান্ডা আবহাওয়া বিরাজ করায় এ সমস্যা হচ্ছে।
প্রতি বছরই আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় সর্দি-জ্বর ও কাশি হয়। এবারও তা-ই হচ্ছে। সমস্যা বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৫
এসএস/বিএস