ঢাকা: বাবা-মাকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ঐশী রহমান খালাস চেয়ে করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন। একইসঙ্গে বিচারিক আদালতের দেওয়া ৪০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ স্থগিত করা হয়েছে।
সোমবার (০৭ ডিসেম্বর) আপিল আবেদনটি শুনানির জন্য গ্রহণ করেন বিচারপতিএম মোয়াজ্জাম হোসেন ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। ঐশীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন সুজিত চ্যাটার্জি।
পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পলিটিক্যাল শাখা) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানকে হত্যার দায়ে তাদের মেয়ে ঐশীকে ডাবল ফাঁসি ও ২০ হাজার টাকা করে দু’বারে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন বিচারিক আদালত। রোববার (০৬ ডিসেম্বর) খালাস চেয়ে ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন ঐশী। আপিল আবেদনের পক্ষে আইনজীবী থাকবেন আফজাল এইচ খান।
চাঞ্চল্যকর এ পুলিশ দম্পতি হত্যা মামলায় গত ১২ নভেম্বর নিহতদের একমাত্র মেয়ে ঐশী রহমানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদের আদালত। ঐশীকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়।
দু’টি খুনের জন্য পৃথক দু’টি অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। দু’টি অপরাধের জন্য আলাদা আলাদা করে ঐশীকে দুইবার ফাঁসি ও দু’বারে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
মামলার অন্য আসামি ঐশীর বন্ধু মিজানুর রহমান রনিকে খুনের ঘটনার পর ঐশীদের আশ্রয় দেওয়ার অপরাধে দু’বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও একমাস কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। অপর আসামি ঐশীর বন্ধু আসাদুজ্জামান জনি খালাস পেয়েছেন।
গত ১৯ নভেম্বর বাবা-মাকে হত্যার দায়ে ঐশী রহমানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়ে দেওয়া বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ের নথিসহ ডেথ রেফারেন্স এসে পৌঁছে।
২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পলিটিক্যাল শাখা) ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরদিন ঐশী গৃহকর্মী সুমীকে নিয়ে রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করেন।
গত বছরের ৯ মার্চ ডিবির ইন্সপেক্টর আবুয়াল খায়ের মাতুব্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে ঐশীসহ ৪ জনকে অভিযুক্ত করে পৃথক দু’টি চার্জশিট দাখিল করেন।
অপর আসামি গৃহকর্মী খাদিজা আক্তার সুমি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার মামলাটির বিচার চলছে শিশু আদালতে। গত বছরের ২০ মে সুমির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে সুমিকে জামিন দেন শিশু আদালতের বিচারক জাকিয়া পারভিন। গত বছরের ১ জুন গাজীপুরের কিশোর সংশোধন কেন্দ্র থেকে মা সালমা বেগমের জিম্মায় জামিনে মুক্তি পেয়েছে সে।
গত বছরের ৬ মে ঐশীসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন মহানগর দায়রা জজ আদালত।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৫
ইএস/এএসআর