ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ইসির নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষিত

অনুমোদন তালিকায় পৌর এলাকার উন্নয়ন প্রকল্প!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১৫
অনুমোদন তালিকায় পৌর এলাকার উন্নয়ন প্রকল্প!

ঢাকা: যেসব এলাকায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, সেসব এলাকায় তফসিলভুক্ত সময়ের জন্য নতুন কোনো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় ভোট প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কায়। পুরনো প্রকল্প বাস্তবায়নও স্থগিত থাকে নির্বাচনকালীন সময়ের জন্য।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) এ নিষেধাজ্ঞা দেয় সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থেই।

আসন্ন পৌর নির্বাচন উপলক্ষেও পৌরসভা এলাকায় উন্নয়ন কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তবে এ নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সাতটি পৌর উন্নয়নমূলক প্রকল্প একনেক সভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য তুলতে যাচ্ছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।

দেশের ২৩৫ পৌরসভায় আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যেসব পৌরসভায় নির্বাচন হবে সেসব পৌর এলাকায় কোনো উন্নয়নমূলক প্রকল্প না নেওয়ার জন্য গত ০২ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

চিঠিতে নতুন কোনো প্রকল্প গ্রহণ, আগের প্রকল্পে নতুন করে অর্থছাড় না দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। এরপরও ইসির নিষেধাজ্ঞা বিধি ভঙ্গ করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় একনেক সভায় ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দিতে যাচ্ছে। যার অধিকাংশ পৌরসভাকেন্দ্রিক।

মঙ্গলবার (০৮ ডিসেম্বর) চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রকল্পগুলো ওঠানো হবে একনেক বৈঠকে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, অনুমোদন পেতে যাওয়া এমন কয়েকটি প্রকল্প আছে যা নির্বাচনের জন্য তফসিলভুক্ত পৌরসভায় বাস্তবায়িত হবে। এর মধ্যে সাতটি প্রকল্প মঙ্গলবারের একনেক বৈঠকের কার্যতালিকায় রাখা হয়েছে, যা সরাসরি ওইসব পৌরসভায় বাস্তবায়িত হবে।
 
যেমন পশ্চিমাঞ্চলে নতুন সঞ্চালন লাইন নির্মাণের জন্য ‘পশ্চিমাঞ্চলীয় গ্রিড নেটওয়ার্ক প্রকল্প’ একনেক কার্যতালিকায় রাখা হয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ১ হাজার ৪২৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। প্রকল্প এলাকা হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, বাগেরহাট, মংলা, ঝিনাইদহ, খুলনার গল্লামারী, সাতক্ষীরা, পাবনার ঈশ্বরদী, পাবনার ভাঙ্গুরা, রাজশাহী, বাঘাবাড়ী, বগুড়া ও মিঠাপুকুরকে। এর অধিকাংশ এলাকায় পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
 
‘বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন সড়ক প্রশস্তকরণসহ উন্নয়ন এবং ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্প’ একনেক সভায় অনুমোদন দেওয়া হবে। অথচ ইসি জানায়, বরিশালের ছয় পৌরসভায় নির্বাচন হতে যাচ্ছে। একনেক এ প্রকল্পটির অনুমোদন দিলে পৌরসভার ভোটাররা প্রভাবিত হতে পারেন। এতে মোট ব্যয় করা হবে প্রায় ৮৪ কোটি টাকা।

‘বাকেরগঞ্জ-পাদ্রীশিবপুর-কাঁঠালতলি-সুবিদখালী ও বরগুনা সড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতিকরণ প্রকল্প’টিও একনেক সভায় উঠছে। অথচ ৩০ ডিসেম্বর বরগুনা সদর পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪৪ কোটি টাকা।
 
‘পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় মিশ্র ফলচাষ’ প্রকল্পও একনেক কার্যতালিকায় রাখা হয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা। পার্বত্য তিনটি জেলার ২৬টি উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। অধিকাংশ এলাকায় ৩০ ডিসেম্বর পৌরসভা নির্বাচন হওয়ার কথা।   রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য এলাকায় মিশ্র ফল বাগানের মাধ্যমে আড়াই হাজার পরিবারকে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে এ প্রকল্পের মাধ্যমে। এতে করে ভোটাররা প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
 
‘সমন্বিত কৃষি কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে কুমিল্লা জেলার লালমাই-ময়নামতি পাহাড়ি এলাকার জনগণের জীবন-জীবিকার মানোন্নয়ন প্রকল্প’ চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য একনেক তালিকায় রাখা হয়েছে। কুমিল্লা সদর জেলার দক্ষিণ, আদর্শ সদর ও বুড়িচং উপজেলার ৬৮টি গ্রাম জুড়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। এতে মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৩ কোটি টাকা। অথচ ইসি সূত্র জানায়, কুমিল্লা জেলার চান্দিনা, লাকসাম, দাউদকান্দি, বরুড়া, চৌদ্দগ্রাম ও হোমনা পৌরসভায় নির্বাচন হতে যাচ্ছে।
 
‘ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার উন্নয়ন’ প্রকল্পটিও একনেকে  উত্থাপন করা হবে। প্রকল্পটি ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২৯টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হবে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৭ কোটি টাকা। প্রকল্প এলাকা নির্বাচন করা হয়েছে  কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, আমতলী, কলাপাড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাচোল, বীরগঞ্জ, তানোর, গোদাগাড়ী, নেত্রকোনা, দুর্গাপুর, নালিতাবাড়ী উপজেলা। ৩০ ডিসেম্বর অধিকাংশ এলাকার পৌরসভায় ভোট নেওয়া হবে।
 
‘স্কিলস ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য একনেক সভায় তোলা হবে।   ১৬২ কোটি টাকায় প্রকল্পটি দেশব্যাপী বাস্তবায়িত হবে। নির্বাচন হতে যাওয়া ২৩৫টি পৌরসভাই পড়েছে প্রকল্প এলাকা হিসেবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৫
এমআইএস/এএসআর

** ‘অসম্মান’ জানাতে নয়, চিহ্নিত করতেই নারী প্রতীক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।