ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

এমপির ব্যবস্থা নেয় ইসি, মন্ত্রীর ক্ষেত্রে রিটার্নিং কর্মকর্তা!

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৫
এমপির ব্যবস্থা নেয় ইসি, মন্ত্রীর ক্ষেত্রে রিটার্নিং কর্মকর্তা!

ঢাকা: আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে সংসদ সদস্যদের (এমপি) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিজেই নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কিন্তু মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলছে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের।

আর এ নিয়ে ভীত এবং বিব্রত বোধ করছেন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
 
দেশের ২৩৫ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৩০ ডিসেম্বর। মন্ত্রী-এমপিদের অনেকেই আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন বলে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হচ্ছে। আর সে সব অভিযোগ আমলে নিয়ে ব্যবস্থার উদ্যোগও নিচ্ছে ইসি।

এক্ষেত্রে এমপিদের শোকজ নিজেই করছে ইসি। আর রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিচ্ছে মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। কিন্তু রিটার্নিং কর্মকর্তারা বলছেন, পৌরসভা নির্বাচন মাত্র মাস দেড়েকের জন্য। আর এ সময় সব ক্ষমতা রিটার্নিং কর্মকর্তার হাতেই থাকে। কিন্তু একজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার বাস্তবে কতটা রয়েছে, তা নিয়ে বিব্রত খোদ রিটার্নিং কর্মকর্তারাই।
 
এবার পৌর নির্বাচনে বেশিরভাগ পৌরসভায় রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে এদের বড় কর্মকর্তা মনে হলেও মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার মতো ক্ষমতা ভোগ করেন না তারা। এছাড়া নির্বাচন শেষ হয়ে গেলেও বিপদের আশঙ্কা থাকে তাদের।
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রিটার্নিং কর্মকর্তারা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মন্ত্রীদের তুলনায় কিছুই না। এছাড়া তারা আমাদের বস। তাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললে- তা আমাদের জন্য বিব্রতকর। একই সঙ্গে তা ভীতিকরও। কেননা ব্যবস্থা নিলে মন্ত্রীর রোষানলে পড়তে হবে। আবার ব্যবস্থা না নিলে ইসি নাখোশ হবে। এক্ষেত্রে তারা আইন বা বিধি ভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে ইসিকেই ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে মত দিচ্ছেন।
 
গত রোববার তিন এমপিকে আচরণবিধি ভঙ্গের কারণে ইসি নিজেই শোকজ করেছে। আর বৃহস্পতিবার তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।
 
আবার ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের সময় যশোরের এমপি আফিল উদ্দিন ও মনিরুল ইসলাম আচরণবিধি ভঙ্গ করায় নির্বাচনের পর তাদের গেজেট আটকে দিয়েছিল ইসি। কিন্তু একই বছর মার্চে চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে নালিশ করা হয়।
 
এরপর ২০১৫ সালে ২৮ এপ্রিলের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় খালেদা জিয়া ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে শোকজ দিতে বলা হয়েছিল রিটার্নিং কর্মকর্তাকে। আবার গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনসহ তিন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেনকে নির্দেশনা দিয়েছিল ইসি।
 
এ বিষয়ে ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনী এলাকায় কিছু ঘটলে রিটার্নিং কর্মকর্তাকেই ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। কেননা, নির্বাচন চলাকালীন সময়ে সব ক্ষমতা রিটার্নিং কর্মকর্তার। তাই যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসবে তাদের বিরুদ্ধেই বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৫
ইইউডি/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।