ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শোকাচ্ছন্ন মধ্যবাড়েরা গ্রাম, শোকের মাতম পরিবারে

এম. আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৫
শোকাচ্ছন্ন মধ্যবাড়েরা গ্রাম, শোকের মাতম পরিবারে ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মধ্যবাড়েরার পাড়, ময়মনসিংহ থেকে ফিরে: বুকফাটা কান্না আর আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার মধ্যবাড়েরা গ্রাম। চলছে শোকের মাতম।



আদরের সন্তানের নির্মম মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না বয়োবৃদ্ধ আব্দুল হাই (৫৫)। বাড়ির বারান্দায় বসে ক্ষণে ক্ষণে বুক চাপড়ে আহাজারি করছেন। দিশাহারা মা রাশিদা বেগম (৫০) কান্নায় বুক ভাসাচ্ছেন। পাশেই আড়াই মাস বয়সী সন্তান সোনিয়াকে নিয়ে পুত্রবধূ হালিমা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছেন।

কোলের অবুঝ শিশুটি জানে না তার বাবা রুবেল মিয়া (২৮) আর কোনদিন ফিরবে না।

মাটিতে শুয়ে থাকা স্বামীর পাশে বসে রাশিদা বেগম আর্তনাদ করে বলছিলেন, ‘এলাকাত খবর লইন, আমার পোলা কেমন? ডাহাইত কইয়া পাষাণ মানুইষরা আমার বুক খালি করলো। আমার নাতিরে এতিম করলো। আমার পোলা তো খারাপ আছিল না। বাপের চায়ের দোহানে বাপেরে সাহায্য করতো। ’

বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত রুবেল মিয়ার বাড়িতে এমন কান্নার রোল দেখা যায়। এর আগে দুপুরে নিজের সন্তানের মৃত্যুর খবর পান রাশিদা বেগম।

‘জোহর নামাজ পড়বার বইছি। এক বেডি আইয়া কইতাছে রুবেলরে মাইরা ফেলছে। আমার পুত একটু পাগল আছিল। শওকত আমার পোলারে বাইল মাইরা লইয়া গিয়া এ সর্বনাশ করছে। ’

গত বুধবার (০৯ ডিসেম্বর) রাতে শওকতের ডাকে বাড়ি থেকে বের হন রুবেল। এরপর আর বাড়ি ফেরেননি। পরদিকে দুপুর নাগাদ বাড়িতে তার মৃত্যুর খবর আসে।

আব্দুল হাইও বলতে থাকেন, ‘আমার পোলা আমার দোহানে কাম করতো। ও ডাকাতি করতে পারে না। কোনোদিন এলাকায় কোনো খারাপ কাম করে নাই। আপনারা তদন্ত কইরা দেখেন। ’

এ শোক সহ্য করতে না পেরে নিহত শওকত আলীর মাও বর্তমানে হাসপাতালে শয্যাশায়ী।

সদর উপজেলার চুরখাই এলাকার মিজান নামে একজনের ফোনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান শওকত, এমনটি জানান তার স্ত্রী পারভীন।

তিনিও দাবি করেন, ‘আমার স্বামী নির্দোষ। ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কাম কইরা সংসার চালায়। এলাকার মানুষ সবাই জানে, ও এমন খারাপ কাম করতে পারে না। আমার দুই সন্তানরে লইয়া আমি অহন চলমু কেমনে। ’

এ ঘটনায় আহত সজিবের ভাই ময়মনসিংহের আনন্দন মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম জসিম জানান, ‘রনি নামে এক ট্রাক চালক বন্ধুর ডাকে শওকত, রুবেল ও সজিব নারায়ণগঞ্জে গিয়েছিল। ওরা কেউই আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য না। ’

** ‘ডাকাত’ পরিচয় মানতে নারাজ এলাকাবাসী

বাংলাদেশ সময়: ০৬১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৫
এটি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।