ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে রাজশাহী

শরীফ সুমন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৫
কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে রাজশাহী ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রাজশাহী: ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে রাজশাহী। আবহাওয়া অধিদফতরের দেওয়া তথ্য মতে রাজশাহীতে শনিবার (১২ ডিসেম্বর) সূর্যোদয় হয়েছে ৬টা ৩৯ মিনিটে।

কিন্তু সকাল ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোথাও সূর্যের মুখ দেখা যায়নি।   

ফলে ভোর থেকে রাজশাহী মহানগীর বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কে হালকা ও ভারী যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে। ঘন কুয়াশার কারণে দশ গজ দূরের বস্তুও স্পষ্ট করে দেখা যাচ্ছে না। গত কয়েকদিন ধরে কুয়াশার আধিক্য থাকলেও আজ তার পরিমাণ বেশি।   

ঘন কুয়াশার সঙ্গে উত্তর কোণ থেকে বইছে ঠাণ্ডা বাতাস। ফলে অগ্রহায়ণের শেষ সপ্তাহে হঠাৎ করেই তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে রাজশাহীতে। কনকনে ঠাণ্ডা বাতাসে কাবু হয়ে পড়েছে পদ্মাপাড়ের ছিন্নমূল মানুষগুলো। দুর্ভোগে পড়েছে নবজাতক শিশু ও বৃদ্ধরা।

রাজশাহী আবহাওয়া অধিদফতরের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আনোয়ারা বেগম বাংলানিউজকে জানান, শুক্রবার  রাজশাহীতে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

শনিবার (১২ ডিসেম্বর) রাজশাহীতে সেই তাপমাত্রা নেমে এসেছে ১৫ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তাপমাত্রা খুব একটা না কমলেও মেঘ ও ঘন কুয়াশার কারণে বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে বলে জানান তিনি।

রাজশাহী আবহাওয়া অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (আবহাওয়া সহকারী) আশরাফুল আলম ঢাকা আবহাওয়া অফিসের বরাত দিয়ে বাংলানিউজকে জানান, চলতি ডিসেম্বরের শেষার্ধে রাজশাহী অঞ্চলে ১ থেকে ২টি মৃদু (৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) অথবা মাঝারি (৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এছাড়া মাসের শেষে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত রাজশাহী অঞ্চলে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে বলে জানান এ আবহাওয়া কর্মকর্তা।

ফলে অগ্রহায়ণের শেষভাগে আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। কখনও ঘন কুয়াশা, আবার কখনও মেঘলা আকাশ। তাপমাত্রা কমার পাশাপাশি প্রতিদিনই কিছু সময়ের জন্য সূর্যের দেখা মিলছে দুপুরে। প্রতিকূল আবহাওয়ায় আলুতে লেট ব্লাইট, বোরোর বীজতলায় কোল্ড ইনজুরি ও পানে পচন রোগের আশঙ্কায় রাজশাহী অঞ্চলের চাষিদের কপালে চাষবাস চিন্তার রেখা ফুটে উঠেছে।

রাজশাহী আঞ্চলিক কৃষি তথ্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ হেল-কাফি বাংলানিউজকে জানান, এ বছর রাজশাহীতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৮ হাজার ৩১৩ হেক্টর জমিতে। আর বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৩৭ হেক্টর। আজ পর্যন্ত বীজতলা তৈরি হয়েছে ২ হাজার ৯২৫ হেক্টর। আলু বীজ রোপনও এখন শেষের দিকে। এবার আলু চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৬ হাজার ৯১৫ হেক্টর। যে কোন পরিস্থিতিতে নিকটস্থ কৃষিবিদের পরামর্শ নিতে বলেন আঞ্চলিক এ কৃষি তথ্য কর্মকর্তা।

এদিকে, শীতের দাপটে দুর্ভোগ বাড়ছে মহানগরীর ভাসমান ও নিম্ন আয়ের মানুষগুলোর। সামর্থ্য অনুযায়ী গরম কাপড় কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন মহানগরীর ফুটপাত ও ভাসমান দোকানগুলোতে। এরই মধ্যে দুস্থদের সহায়তায় কম্বলসহ শীতের পোশাক বিতরণ শুরু হয়েছে ব্যক্তিগত এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে। সরকারি উদ্যোগেও এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে সীমিত পরিসরে। তবে তাতে প্রয়োজন মিটছে না।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৫
এসএস/এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।