ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগের পথ বেয়ে চূড়ান্ত বিজয়

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৫
বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগের পথ বেয়ে চূড়ান্ত বিজয়

ঢাকা: ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। এই দিনটি বাঙালি জাতির জীবনে একটি স্মরণীয় ও কলঙ্কের দিন।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরেরা এ দেশের সূর্য সন্তান বুদ্ধিজীবীদেরকে ন্যাক্কারজনকভাবে হত্যা করে।

৯ মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের শেষ পর্যায়ে বিভিন্ন স্থানে আত্মসমর্পণ করতে শুরু করেছিল পাকিস্তানিরা। তারা যখন বুঝতে পারলো, মুক্তিযুদ্ধে তাদের পরাজয় সময়ের ব্যাপার মাত্র, ঠিক তখনই দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আল-শামসদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এ দেশের শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে।

কোনো জাতির অগ্রগতি ও উন্নতির পেছনে থাকে বুদ্ধিজীবীদের অবদান। জ্ঞান, মেধা, মননে এবং সংস্কৃতিতে উন্নত জাতি হিসেবে গড়ে তোলার মূলে মেধা হিসেবে কাজ করেন বুদ্ধিজীবীরা। জাতি গঠনের কারিগর বলা হয় বুদ্ধিজীবীদের। জাতির সেই মেধাকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলো বর্বর পাকিস্তানিরা।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মুক্তিযুদ্ধে তাদের পরাজয় সুনিশ্চিত বুঝতে পেরে বাঙালি জাতি যাতে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে সে নীলনকশা তৈরি করে। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বিজয়ের ঊষালগ্নে বাঙালির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের বেছে বেছে অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করে।

মুক্তিযুদ্ধের পুরো নয়মাসে হাজার হাজার বুদ্ধিজীবী। এই বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করার পেছনে বাংলাদেশকে চিরদিনের জন্য মেধাশূন্য করার জঘন্য ষড়যন্ত্র।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ’৭০-এর নির্বাচন থেকে শুরু করে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয় অর্জন পর্যন্ত প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে বাঙালি জাতিকে উজ্জীবিত করার জন্য এদেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, কবি, সাহিত্যিক, চিত্রশিল্পী, সঙ্গীতশিল্পী, চলচ্চিত্রকারসহ বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা ছিল অপরিসীম।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে দীর্ঘ নয়মাস মুক্তিযুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পেছনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য নেতৃত্বে এদেশের বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকাও ছিল গুরুত্বপূর্ণ।

২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম হত্যাযজ্ঞ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতারের পর মুক্তিযুদ্ধ সঠিকভাবে পরিচালনা করে চুড়ান্ত বিজয়ের পথে নিয়ে যাওয়ার কৌশল নির্ধারণ এবং মুক্তিযুদ্ধে বাঙালিদের ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য উজ্জীবিত করার পেছনে বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা ছিল অপরিসীম।

তাই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগের পথ বেয়ে ১৬ ডিসেম্বর আসে বাংলাদেশের চূড়ান্ত বিজয়।

বাঙালি জাতি তাদের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করে।

বাংলাদেশ সময়: ০২২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৫
এসকে/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।