ঢাকা: নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায় অধিকতর তদন্ত চেয়ে নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটির করা আবেদনের নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
পুলিশ চাইলে অধিকতর তদন্ত করতে পারবে এবং সেশন জজকে ষড়যন্ত্রের একটি ধারা (১২০বি) যোগ করতে বলেছেন উচ্চ আদালত।
সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) এ আদেশ দেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মন্টু ঘোষ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ এ কে এম মনিরুজ্জামান কবীর।
পরে মন্টু ঘোষ সাংবাদিকদের জানান, আদালত বলেছেন, এখানে ষড়যন্ত্র হয়েছে। তাই সেশন জজকে ষড়যন্ত্রের ধারা (১২০বি) অন্তুর্ভুক্ত করে মামলাটির সুবিচার করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
অধিকতর তদন্তের বিষয়ে তিনি বলেন, এখানে আদালত বলেছেন, তদন্ত কর্মকর্তার আইনগত ক্ষমতা আছে। তিনি চাইলে যেকোনো সময় তদন্ত করতে পারেন।
এখন নূর হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে কি-না, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা চাইলে নূর হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন।
শুনানি চলাকালে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে নারাজি আবেদনের পর ম্যাজিস্ট্রেট বিউটির বক্তব্যের ওপরে যে বিষয়ে পরীক্ষা করেছেন তার আদেশ চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। আবেদনকারী পক্ষ গত বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) ওই আদেশটি হাইকোর্টে দাখিল করেন।
গত ০১ ডিসেম্বর শুনানির এক পর্যায়ে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, নারায়ণগঞ্জের সাত খুন হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে ত্রুটি রয়েছে। তবে অধিকতর তদন্তের নামে শতভাগ অর্জন করতে গিয়ে যারা কারাগারে রয়েছেন, তারা আবার কোনো সুবিধা না নিয়ে নেন। কারণ, দেশের মানুষ তাকিয়ে আছেন, মামলাটির সুষ্ঠু বিচার হোক।
আবদুল বাসেত মজুমদার শুনানিতে বলেন, মামলার বাদী এজাহারে ৩৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছিলেন। কিন্তু তদন্ত শেষে পুলিশের দাখিল করা অভিযোগপত্রে দেখা গেল, এজাহারভুক্ত ৫ আসামিকে তাতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। মামলার বাদী যদি এজাহারে কারো নাম বলেন, সাধারণত অভিযোগপত্রে তার নাম থাকাটা উচিত। কিন্তু পুলিশ যে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে সেখানে কারো নাম রয়েছে, আবার কারো নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এতে বাদীর ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি বলেন, এই সাত খুনের ঘটনার মূল হোতা নূর হোসেন মামলার তদন্তকালে দেশে ছিলেন না। সরকার তাকে ফিরিয়ে এনেছে। এখন রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে নতুন তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
গত বছরের ২৭ এপ্রিল দুপুরে কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহরণ করা হয়। ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জন এবং ১ মে অপরজনের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় দু’টি মামলা করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৫
ইএস/এএসআর