ঢাকা: হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দিনারপুরে অবাধে পাহাড় ও টিলা কাটার ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো.সাইফুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতের এ আদেশ পালন করে দুই সপ্তাহের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে পরিবেশ অধিদফতরের সিলেটের বিভাগীয় পরিচালক, হবিগঞ্জের উপ পরিচালক, হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার, নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং নবীগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ২২ আগস্ট দৈনিক কালের কণ্ঠে ‘হবিগঞ্জ-পাহাড় কাটা থামছে না’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদন যুক্ত করে পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে ১৩ ডিসেম্বর একটি রিট দায়ের করা হয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের পাশাপাশি হাইকোর্ট রুলও জারি করেছেন।
কালের কণ্ঠ পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না পাহাড় কাটা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হিসেবে খ্যাত হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দিনারপুরে অবাধে পাহাড় ও টিলা কেটে উজাড় করা হচ্ছে। কিছুদিন বন্ধ থাকার পর প্রায় দুই মাস ধরে ওই পরগনার সবচেয়ে উঁচু পাহাড় মিরেরটিলা কেটে উজাড় করছে প্রভাবশালী মহল’।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নবীগঞ্জ উপজেলার বনগাঁও গ্রামের মৃত নওয়াব উল্লার ছেলে সোনা মিয়াসহ একটি প্রভাবশালী মহল ওই পাহাড় কাটায় জড়িত। তারা প্রকাশ্যে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। পাহাড় কাটার কারণে পাহাড় ও টিলাধসে মৃত্যুর ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। পরিবেশও ভারসাম্য হারাচ্ছে। পাহাড় কাটায় দিনারপুর এলাকার প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য হারিয়ে যাচ্ছে।
এগুলো বেশিরভাগই কাটা হয়েছে আবাসিক প্রকল্প, বাণিজ্যিক মার্কেট কিংবা ঘর-বাড়ি তৈরির মাটি ভরাটের জন্য। ইদানিং মাধবপুরে চালু হওয়া সিরামিক কারখানায় এবং বিবিয়ানায় বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পেও এখান থেকে মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে।
গত সাত বছরে নবীগঞ্জের দিনারপুরে পাহাড়ের মাটিচাপা পড়ে একই পরিবারের ছয়জনসহ অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৫
ইএস/এএসআর