ঢাকা: নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মুছাপুর গ্রামের ফোর মার্ডার মামলায় চার আসামিকে যাবজ্জীবন ও সাতজনকে দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হচ্ছেন- আল আমিন, শাহীন মিয়া, কালা মিয়া ওরফে কাচালা ডাকাত এবং অলেখ চান।
দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্তরা হচ্ছেন- মোবারক, জামাল ওরফে লেংড়া জামাল, আনোয়ার হোসেন আনার, মিষ্টু মিয়া ওরফে মোবারক আলী, তারেক মিয়া, জিল্লু মিয়া ও জামাল মিয়া। তাদের দশ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাদেরকে আরও ছয়মাস করে কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
মামলার ১২ জন আসামির অন্যজন রনি মিয়া অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার বিচার চলছে নরসিংদীর কিশোর আদালতে।
সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে মামলার রায় ঘোষণা করেন ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদ।
নিহত রুমানা ও রুনার ভাই শফিকুল ইসলাম রায় প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এ রায় তিনি প্রত্যাখ্যান করছেন। তারা ন্যায়বিচার পাননি। তারা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, মামলার তদন্তে অনেক গাফিলতি ছিল। ঘটনার ৫ বছর পর মামলার চার্জশিট হয়। চারজন তদন্ত কর্মকর্তা বদলি হন। চাঞ্চল্যকর এমন মামলার গুরুত্ব দিয়ে দ্রুততম সময়ে চার্জশিট দেওয়া উচিত ছিল। মামলার চার্জশিট দাখিলে তদন্ত কর্মকর্তাদের অনীহা পরিলক্ষিত হয়।
মামলার তেমন কোনো চাক্ষুষ সাক্ষীও ছিলেন না। একমাত্র চাক্ষুষ সাক্ষী কাজের মেয়ে। কিন্তু সেও মানসিক প্রতিবন্ধী। শুধুমাত্র অপ্রাপ্তবয়স্ক একজনের জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে মামলার বিচার করা যায় না।
তারপরও মামলার নথিতে প্রাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে তিনি এ রায় প্রদান করেন বলে রায়ের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেন বিচারক।
২০০৬ সালের ২৭ নভেম্বর পূর্বশত্রুতার জের ধরে ধারালো কিরিচ দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয় দুই বোন রুমানা ও রুনা, রুমানার ২১ দিনের শিশুপুত্র অর্নব এবং রুনার শিশুকন্যা বর্নকে। দুর্বৃত্তদের অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত রুনার ছেলে পঙ্গু ও গৃহকর্মী মাথায় আঘাত পেয়ে মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে গেছে।
এ ঘটনায় নিহত রুমানা ও রুনার বাবা শামসুদ্দিন মোল্লা বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে নরসিংদীর রায়পুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৫
এমআই/এএসআর