ঢাকা: যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে কালক্ষেপণ ও তাদের আড়াল করায় জামায়াতের পাশাপাশি বিএনপির বিচার চাইলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এমপি।
একইসঙ্গে পাকিস্তানকে সিমলা চুক্তির শর্ত মেনে ১৯৫ যুদ্ধাপরাধীর বিচারে বাধ্য করতে কূটনৈতিক বা আন্তর্জাতিক আদালতের সহায়তা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে ডিআরইউ আয়োজিত ‘স্বজনদের স্মৃতিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
মেনন বলেন, আজ যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে তার সূচনা হয়েছে স্বাধীনতার পর পর। কিন্তু পঁচাত্তরের পর জিয়া, এরশাদ আর খালেদার জন্য বিচার সম্পন্ন হয়নি।
বিচারে কালক্ষেপণ, সিদ্ধান্ত না নেওয়া, যুদ্ধাপরাধীদের সহযোগিতা, আড়াল ও পুর্নবাসন করার জন্য বিএনপিরও বিচার হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বিচারপতি হামিদুর রহমান কমিশন বাস্তবায়ন করে ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীকে বিচার করতে পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানান মেনন।
চুক্তির শর্ত মেনে এ বিচার করা পাকিস্তানের দায়িত্ব। যদি বিচার না করা হয় তাহলে বাংলাদেশকে তাদের বিচার করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন মেনন।
একটি আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাতিল না করে কেবল পাকিস্তানের ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীর বিচারে তা নিয়োগ করতে সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি।
পিএসসি সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর এস এম আনোয়ারা বেগম বলেন, যে সংগঠন ও ব্যক্তি মাটির সঙ্গে বেইমানি করেছে তাদের এদেশের মাটিতে থাকার অধিকার নেই।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী আশরাফুজ্জামান ও চৌধুরী মঈন উদ্দিন বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র করছেন। তাদের ফিরিয়ে এনে ফাঁসি কার্যকর করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান বলেন, রাজাকারের সরকারি তালিকা হচ্ছে। একটি তালিকা শহীদদের স্বজনরাও করতে পারেন। তাহলে কেউ বাদ পড়বে না।
তিনি বলেন, একাত্তরে দেশকে মেধাশূন্য করতে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছে। এখন আবারও মেধাশূন্য করতে ব্লগার নাম দিয়ে মুক্তচিন্তার মানুষদের হত্যার ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
ডিআরইউ’র সভাপতি জামাল উদ্দীন বলেন, বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে ও এদেশ যাতে কোনোদিন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে সেজন্য বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমেরিকা, জাপানের মতো আমাদের মানবসম্পদ রয়েছে। যদি বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা না হতো বাংলাদেশ আমেরিকা, জাপানের মতো হয়ে যেতো।
ডিআরইউ’র সাবেক সভাপতি শাহেদ চৌধুরী বলেন, শহীদদের সন্তানরা তাদের স্বজন হারিয়েছেন। আর আমরা হারিয়েছি আমাদের আত্মাকে।
রাষ্ট্রীয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে এখনো মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি বসে সুযোগ সুবিধা নিচ্ছে। সে সুবিধা মুক্তিযুদ্ধের শক্তির স্বপক্ষের শক্তিকে দিতে তিনি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারের সন্তান মিজানুর রহমান, কাজী সাইফুদ্দিন আব্বাস, সাইফুল আলম মুক্তিযুদ্ধে তাদের স্বজনদের স্মৃতিচারণ করেন।
অনুষ্ঠানে ওয়ারেছাত হোসেন বেলাল বীরপ্রতীক এমপি, ডিআরইউ সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি মাহমুদুর রহমান খোকন, ডিআরইউ’র সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, সহ সভাপতি শরীফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৫
আরইউ/এএসআর