রাজশাহী: রাজশাহীর মতিহারের দেওয়ানপাড়া সড়কে যাত্রীবাহী দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ জনে। নিহতদের মধ্যে দুজন নারী রয়েছেন।
এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩০ জন। তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে ২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে রাজশাহীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বাংলানিউজকে জানান, ঢাকার কল্যাণপুর থেকে সকাল ৮টায় ছেড়ে আসা ন্যাশনাল ট্রাভেলসের যাত্রীবাহী একটি বাসের (ঢাকা মেট্রো: ব ১৪-৭৮৭৪) সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে যাওয়া অর্পা ট্রাভেলস নামের অপর একটি যাত্রীবাহী বাসের (বগুড়া মেট্রো: ব-৭৬৭৮) মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় মাঝখানে একটি অটোরিকশা পড়ে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। অর্পা ট্রাভেলসের বাসটি রাজশাহী থেকে বাগমারার তাহেরপুরের উদ্দেশে যাচ্ছিল।
দুর্ঘটনার পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতলের (রামেক) ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. শাখাওয়াত হোসেন রানা বাংলানিউজকে ৭ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে দুইজন ও রামেক হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়। তবে প্রাথমিকভাবে আহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
নিহতরা হলেন, রাজশাহীগামী ন্যাশনাল ট্রাভেলসের চালক নারায়ণগঞ্জের শহীদুল ইসলাম (৩৭), ওই বাসের যাত্রী চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার নরসিয়া গ্রামের আবু জাফর (৬০) ও তার স্ত্রী বেলী আরা বেগম (৫৫), অটোরিকশা যাত্রী বাঘার ফতেহপুর গ্রামের ফারুক হোসেনের মেয়ে ফারজানা লুবনা (২৫)। তিনি রাজশাহী সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্রী।
নিহত অন্যরা হলেন- অর্পা ট্রাভেলসের চালক নাটোর জেলা সদরের চকরিয়া ঢালান এলাকার নুরুন নবীর ছেলে মিন্টু শেখ (৩৫), ওই বাসের যাত্রী রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার আরোইল গ্রামের কাজী আবু বক্কর সিদ্দিক (৬৫) ও পুঠিয়ার ভাল্লুকগাছি গ্রামের ময়েন উদ্দিন (৬৫)। এদের মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে রাজশাহী দমকল বাহিনীর দুটি ইউনিট ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহত দুজন ও আহত ৩৫ জনকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে নেওয়ার পথে পাঁচজন মারা যান।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএফএম রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, আহতদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের চিকিৎসা চলছে। এছাড়া তিনটি ওয়ার্ডে অন্যদেরও চিকিৎসা চলছে। হাসপাতালের নিজস্ব খরচেই জরুরি ভিত্তিতে তাদের ওষুধপত্র ও খাবারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (পূর্ব) আমির জাফর বাংলানিউজকে জানান, ঘটনার পর প্রায় প্রায় দুই ঘণ্টা ওই সড়ক বন্ধ ছিল। পরে পুলিশলাইন থেকে রে-কার দিয়ে দুর্ঘটনা কবলিত যাত্রীবাহী বাস দুটি সরিয়ে ফেলে যানবাহন চলাচলের জন্য দেওয়ানপাড়া সড়ক উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানান পুলিশের ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৫/আপডেট: ১৭৪০ ঘণ্টা
এসএস/জেডএস/এমজেএফ/
** রাজশাহীতে দুই বাসের সংঘর্ষে নিহত ২