ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্মৃতিসৌধে সর্বস্তরের জনতার ঢল

মফিজুল সাদিক ও সাঈদ শিপন | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৫
স্মৃতিসৌধে সর্বস্তরের জনতার ঢল ছবি: দীপু / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

জাতীয় স্মৃতিসৌধ (সাভার) থেকে: মহান বিজয় দিবসে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে জনতার ঢল নেমেছে। কুয়াশা ও ঠাণ্ডা বাতাস উপেক্ষা করে বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে ভোর থেকে মহাসড়কের পাশে অপেক্ষা করতে থাকেন সর্বস্তরের মানুষ।


 
বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) ভোরে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিজয় দিবসের কর্মসূচি।

সকাল ৬টার দিকে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা জানানোর পর সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে জাতীয় স্মৃতিসৌধে। বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ ছুটে আসেন বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে।

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিওথেরাপি বিভাগের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান শ্রদ্ধা জানাতে এসে বলেন, শীতের সকালের ঘুমটা সবারই কাছে প্রিয়। তবে তার থেকে বেশি প্রিয় বিজয়ের সকাল। স্কুল ও কলেজে শহীদ মিনারে ফুল দিতাম, আজ স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে পেরে ভালো লাগছে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেটের (বিআইসিএম) ৩০ জন সদস্য ফুল দিতে এসেছেন স্মৃতিসৌধে। বিআইসিএম-এর কর্মকর্তা আবদুল্লাহিল ওয়ারিশ বলেন, আজকের দিনটি বাঙালি জাতির স্মরণীয় দিন, এটি একটি গৌরবের দিন। যতদিন বাঁচবো এই দিনটা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবো।
 
জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে দেশ আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাচ্ছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু প্রকল্পের নির্মাণ কাজ প্রমাণ করে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে পাকিস্তান যে মিথ্যাচার করেছে সেজন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাদের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।

সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের ভাইস চেয়ারম্যান আবু ওসমান চৌধুরী শ্রদ্ধা জানাতে এসে বাংলানিউজকে বলেন, পাকিস্তান আন্তর্জাতিকভাবে মিথ্যাচার করছে। এই মিথ্যাচারের জন্য শুধু প্রতিবাদ করলেই হবে না। তাদের সঙ্গে শিক্ষা, ব্যবসা বাণিজ্য ও সাংস্কৃতি সম্পর্কসহ সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে।

সকাল সাড়ে ৮টায় বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট একিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী নেতা-কর্মীদের নিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর আগে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, স্বাধীনতা মানে ভালো থাকবো, ভালো চলবো ও গণতন্ত্র। গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা যেদিন একই সঙ্গে চলবে সেদিনই প্রকৃত বিজয়ের স্বাদ পাবো। আমরা স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে একসঙ্গে দেখতে চাই। তবে সেদিন আর বেশি দূরে নয় স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র একসঙ্গে চলবে। বর্তমানে দেশে অসম্পূর্ণ গণতন্ত্র বিরাজ করছে।

বেলা যতই গড়াচ্ছে সর্বস্তরের মানুষের ঢল ততই বাড়ছে। সকাল ১০টা পর্যন্ত স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছে, জাকের পার্টি, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, জাতীয়তাবাদী যুবদল, বাংলাদেশ লোক-প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বিপিএটিসি), জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্র (সিআরপি), শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন দুগ্ধ খামার, জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল, পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন, জাতীয় পার্টি, প্রশিকা, আমরা মুক্তিযুদ্ধের সন্তান. মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, ন্যাপ, জাতীয় গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশন, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, সাম্যবাদী দলসহ আরও অনেক রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।

তবে বরাবরের মতো এবারও লাল সবুজ পতাকায় স্মৃতিসৌধে আসেন ‘সজাগ’ এর পাঁচ শতাধিক কর্মী। এরা সবাই ধামরাইয়ের শৈলান গ্রাম থেকে মোটরসাইকেলযোগে আসেন। তারা শহীদ বেদীর সামনে মুষ্টিবদ্ধ হাতে শপথ করেন দেশ গড়ার।

সজাগ কর্মী বাবুল সারোয়ার বলেন, প্রতিটা জাতীয় অনুষ্ঠানে আমরা এখানে আসি। দেশ গড়ার শপথ নেই যাতে করে মক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারি।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৬
এমআইএস/এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।