যশোর: মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক জাসদ সভাপতি কাজী আরেফ আহমেদসহ কুষ্টিয়া জেলা জাসদের ৫ নেতা হত্যার দায়ে তিন আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা রাশেদুল ইসলাম ওরফে ঝন্টু, আনোয়ার হোসেন এবং সাফায়াত হোসেন ওরফে হাবিব নামের মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত তিন আসামিকে যে কোনো সময় ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহম্মেদ বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ পেয়ে তিন আসামির ফাঁসির রায় কার্যকর করতে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। যে কোনো সময় তাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হতে পারে। তিনি আরও জানান, ফাঁসির রায় কার্যকরে জল্লাদের কাজ করার জন্য যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের অনেক কয়েদি রয়েছে। তবুও এই রায় কার্যকরকে কেন্দ্র করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে দু’জন জল্লাদকে ইতোমধ্যে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার কালিদাসপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক জাসদ সভাপতি কাজী আরেফ আহমেদ, কুষ্টিয়া জেলা জাসদের তৎকালীন সভাপতি লোকমান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী, স্থানীয় জাসদ নেতা ইসরাইল হোসেন ও সমশের মন্ডল।
এ ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় ২০০৪ সালের ৩০ অগাস্ট কুষ্টিয়ার জেলা জজ আদালত ১০ জনের ফাঁসি ও ১২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেয়।
তবে ওই সময়, ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া ৬ আসামি পলাতক ছিলো। ২০০৮ সালে এক ফাঁসির আসামি ও যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া ১২ জনকে আপিলে খালাস দেন হাইকোর্ট। এতে খালাস পাওয়া সব আসামির বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
আর খালাসের আবেদন করে, মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া তিন আসামি রাশেদুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন ও ইলিয়াস হোসেন। হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।
পরে, রিভিউ আবেদন করে, রাশেদুল ও আনোয়ার। তবে, সেখানেও তাদের ফাঁসির দণ্ড বহাল থাকে। আর কারাগারেই মারা যান ইলিয়াস।
রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা চান, ফাঁসির দণ্ড পাওয়া রাশেদুল ও আনোয়ার। তবে তা নাকচ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। ফলে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ফাঁসির রায় কার্যকরের উদ্যোগ গ্রহণ করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০১৫
এসএইচ