ঢাকা, শুক্রবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২৭ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

মেয়র আনিসুলে গতি পেয়েছে রাজধানীর প্রবেশপথ

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০১৬
মেয়র আনিসুলে গতি পেয়েছে রাজধানীর প্রবেশপথ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ‘এখানে বাস দাঁড়ানো সম্পূর্ণ নিষেধ, দাঁড়ালেই দণ্ড’। ব্যস্ত সড়কের পাশে ফাঁকা জায়গায় বড় করে বসানো সাইনবোর্ড।

এর প্রায় একশ’ গজ দূরে ছোট বোর্ডেও একই নির্দেশনা। নির্দেশ মানছে যানবাহনগুলো, টহলে আছে ট্রাফিক পুলিশ, দাঁড়ালেই জরিমানা-দণ্ড।

সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের এক সপ্তাহের মাথায় রাজধানীর প্রবেশপথ গাবতলীতে সরেজমিনে দেখে এই চিত্র পাওয়া গেছে বৃহস্পতিবার ( জানুয়ারি ০৭)।

রাজধানীর প্রবেশপথ যানজটমুক্ত হবে- ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের ঘোষণায় এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগ।

১ জানুয়ারি শ্যামলী থেকে কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল, গাবতলী ও আমিনবাজার এলাকা যানজটমুক্ত করতে অভিযানের ঘোষণা দিয়েছিলেন মেয়র আনিসুল। পাশাপাশি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন অবৈধ পার্কিংয়ের ‍বিরুদ্ধেও।
 
আগে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা যানবাহনগুলোকে ঢাকার এই প্রবেশপথে যানজটে পড়ে থাকতে হতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা। রাস্তায় যত্রতত্র পার্কিং, অবৈধ দখলদারদের দৌরাত্ম্যে ঢাকা থেকে বের হওয়ার পথেও ছিল বিপত্তি।

গত ২৯ ডিসেম্বর মেয়র আনিসুল হক স্থানীয় একটি সুধী সমাবেশে ঘোষণা দেন, নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে শ্যামলী, কল্যাণপুর, গাবতলী ও আমিনবাজার এলাকায় প্রধান সড়কে আর কোনো পার্কিং বা অবৈধ স্থাপনা থাকতে পারবে না।

ওই ঘোষণার পর ১ জানুয়ারি থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ অভিযান শুরু করে, এখন চোখ যতদূর যায়, শুধু সড়কের বাঁকই দেখা যায়, কোনো গাড়িকে আর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় না।

টার্মিনালে দায়িত্বরত একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, যানবাহনগুলো আর এলোমেলোভাবে পার্কিং করা নেই, অবৈধ দখলদার থেকে মুক্ত সড়ক। নেই কোনো উৎপাতও।

গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের সামনের প্রধান সড়কের পাশে এখন বিস্তৃত খোলা জায়গা। বৃহস্পতিবার (০৭ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে আটটার দিকে একটি পিক-আপ ভ্যানে করে সাইনবোর্ড এনে বসানো হচ্ছিলো সেই খোলা জায়গায়।

পুলিশের পিক-আপভ্যানে থাকা আনসার সদস্য জনি বাংলানিউজকে বলেন, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই এলাকায় বড় চারটি ও ছোট ছোট আরও ৫টি সাইনবোর্ড বসানো থাকে। অভিযানের পর এই এলাকা যানজটমুক্ত হয়েছে বলে জানান জনি।

গাবতলী বাস টার্মিনালের প্রথম গেটের কাছে মানিকগঞ্জগামী একটি বাস কাউন্টারের ম্যানেজার আব্দুল হক বলেন, এখানে বাস দাঁড়াতেই দেয় না। বাস আসে, যাত্রী তুলে নিতে যতক্ষণ, এরপর চলে যায়।  

নিজেদের একটু সমস্যা হলেও বৃহত্তর স্বার্থে তা মেনে নিতে অসুবিধা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, এখন রাস্তা ফাঁকা, যতদূর চোখ যায় রাস্তা ফাঁকাই দেখা যায়, আগে তো যানবাহনের ঠেলাঠেলিতে রাস্তায় দাঁড়ানোই যেত না।

অথচ গাবতলীতে রাস্তার পাশে প্রতিদিনই প্রায় পাঁচ হাজার ট্রাক এবং তিন থেকে চারশ’ বাস অবৈধ পার্কিং করে আসছিলো বলে এর আগে জানিয়েছিলেন মেয়র।

আমিনবাজার ব্রিজের আগে একটি উড়াল সড়ক বা ফ্লাইওভার করলে গাবতলী আরও যানজট মুক্ত হবে বলে মনে করেন পরিবহন ব্যবসায়ী আব্দুল হক।

ঢাকার যানজট নিরসনে অব্যাহত প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে গত দুই মাস ধরে মহাখালী, কারওয়ানবাজার, মোহাম্মদপুর, তেজগাঁও, উত্তরা, আব্দুল্লাপুর, মিরপুর, পল্লবী এলাকায় সড়ক থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছেন মেয়র আনিসুল।

অন্যান্য এলাকার মত গাবতলী এলাকার যানজটও অনেকটা সহনীয় হয়ে এসেছে বলে জানান আনসার সদস্য জনি ও পরিবহন কর্মী আব্দুল হক।

তবে রাস্তার পাশে নিচু জায়গায় পচা পানি আর ময়লা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, যা যাত্রীদের জন্য অসুবিধার কারণ বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৬
এমআইএইচ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।