ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সিলেটে মা মনি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ১২৫ কোটি টাকার মামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৬
সিলেটে মা মনি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ১২৫ কোটি টাকার মামলা

সিলেট: সিলেটে জামায়াত পরিচালিত মা মনি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ১শ’ ২৫ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে যুগ্ম জজ ২য় আদালতে মামলাটি দায়ের করেন জেলার কানাইঘাটের উমরগঞ্জের শরিফ উদ্দিনের স্ত্রী হালিমা বেগম।

মামলায় হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. এমএ মতিন, পরিচালক ও জামায়াতের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানসহ ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।

অন্য অভিযুক্তরা হলেন হাসেপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আজির উদ্দিন আহমদ, নির্বাহী পরিচালক মোদাব্বির হোসেন, পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ খসরু, মুজিবুল হক, ব্যবস্থাপক জামাল আহমদ, ইন্টার্ন ডা. আবু নাঈম আহমদ ও ডা. সেতু ভৌমিক।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ সালের ২৮ অক্টোবর হালিমা বেগমের ৩ মাস বয়সী ছেলে আফনানকে নিয়ে শিশুবিশেষজ্ঞ ডা. এমএ মতিনের কাছে আসেন। শিশুটি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত বলে জানিয়ে তিনি তাকে  হাসপাতালে ভর্তি করে ইনসেন্টিভ কেয়ারে রেখে চিকিৎসার পরামর্শ দেন। ‍কিন্তু ভর্তির পর রোগীর কোনো খোঁজ খবর নেননি ডা. মতিন।   হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও সারারাত চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা করেননি।

পরদিন ২৯ অক্টোবর শিশুটির অবস্থার আরো অবনতি হলেও ডা. মতিন অন্য হাসপাতালে রোগী দেখায় ব্যস্ত থাকেন।   ডা. মতিন ফোন না ধরায় পরে ডা. মোদাব্বির ও ব্যবস্থাপক জামাল মুঠোফোনে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন জানিয়ে বার্তা পাঠান। কিন্তু তিনি তাতে গুরুত্ব দেননি।   রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ার পরও অভিযুক্তরা সুচিকিৎসার বন্দোবস্ত করেননি।  

পরের দিন বেলা পৌনে ১টার দিকে ইন্টার্ন আবু নাইম আহমেদ ও সেতু ভৌমিক ৩ মিলি’র স্থলে ৩শ মিলির ইনজেকশন পুশ করে শিশুর মৃত্যু ঘটান বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়,  আসামিরা চিকিৎসায় অবহেলা, ভুল চিকিৎসা দিয়ে জীবন বিপন্ন করা, আলামত নষ্ট ও জালিয়াতির মাধ্যমে নতুন তথ্য সংযোজন অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করেছেন।   এ কারণে বাদির ৩মাস বয়সী একমাত্র ছেলে আফনান প্রাপ্ত বয়স্ক হতে ৭৫ বছর পর্যন্ত আয় জনিত ৫০ কোটি টাকা, পিতা-মাতা আত্মীয়স্বজনের সাহচর্য পাবার সুযোগ হারানো জনিত ক্ষতির পরিমাণ  ২৫ কোটি টাকা।   পিতা-মাতা, পরিবার ও আত্মীয় স্বজনের মর্মপীড়া জনিত ক্ষতি ২৫ কোটি টাকা। হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় চিকিৎসার অভাবে বাদির ছেলের শারিরিক কষ্ট হওয়া জনিত ক্ষতির জন্য ২৫ কোটিসহ সর্বসাকূল্যে ১শ’২৫ কোটি ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে।  

বাদি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রফিক আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, আদালত মামলাটি গ্রহণ করেছেন। তবে মামলা দায়েরের বিলম্ব হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এর আগে কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলায় (জিআর-৫৩/২০১৩) পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে ইন্টার্নরা অভিজ্ঞতাহীন, নার্সের কাজে নিয়োজিতরা প্রশিক্ষিত নন, শুধু এসএসসি পাশ। ঘষামাজা করা হয়েছে ফাইলপত্রে। এর  প্রতিবেদনও পুলিশ আদালতে দাখিল করেছিল।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৬
এনইউ/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।