ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

গ্রাহকের টাকা নিয়ে লাপাত্তা ফাস্ট মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ

শেখ তানজির আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৬
গ্রাহকের টাকা নিয়ে লাপাত্তা ফাস্ট মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ

সাতক্ষীরা: মাসে ১৫শ টাকা মুনাফা দেওয়ার চুক্তিতে ফাস্ট মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটিতে পাঁচ লক্ষ টাকা রেখেছিলেন সালেহা খাতুন।

সাতক্ষীরা শহরের মিনি মার্কেটের চায়ের দোকানদার সালেহা খাতুন প্রতিবন্ধী সন্তানের কথা ভেবে বাবার বাড়ির জমি বিক্রি করে টাকা জমা রেখেছলিনে।

কিন্তু মুনাফা দূরের কথা, এখন আসল টাকাই ফেরত পাবেন কি না সে চিন্তায় তার রাতের ঘুম হারাম।

 

শুধু কি সালেহা খাতুন, মিনি মার্কেটের মুদি ব্যবসায়ী আব্দুল রশিদ, ফকির মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের মালিক ছোট খোকন, রংতুলি অ্যাডের মহিবুল্লাহসহ অসংখ্য মানুষের জমা রাখা কোটি কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে ভূঁইফোড় ফাস্ট মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি।

মুনাফার আশায় টাকা জমা রেখে এখন দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন গ্রাহকরা। জমা দেওয়া আমানত ফেরত পাবেন কি না-তা নিয়ে শংকা-উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন তারা।    

এদিকে টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো গ্রাহকদের নামে সাতক্ষীরার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৭/১১৭(গ) ধারায় মামলা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এতে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা সম্প্রতি ফাস্ট মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির ম্যানেজার ডা. ওমর ফারুকের ব্যক্তিগত অফিস ঘেরাও করেন। এ সময় গ্রাহকদের তোপের মুখে পড়েন তিনি। তাকে টানাহেঁচড়াও করেন গ্রাহকরা।

ভুক্তভোগীরা জানান, ২০১০ সালে সাতক্ষীরায় কার্যক্রম শুরু করে ফাস্ট মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি। এক পর্যায়ে ২শ’ গ্রাহকের কয়েক কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায় ভূঁইফোড় এই প্রতিষ্ঠানটি।

ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক ছোট খোকন বাংলানিউজকে বলেন, ‘লাখে ১৫শ টাকা মুনাফা দেওয়ার কথা। গত দুই আড়াই বছর ধরে কোনো মুনাফা দিচ্ছে না। আবার ডিপোজিটের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও তারা মূল টাকা ফেরত দিচ্ছে না। এখন আমরা কি করবো বুঝতে পারছি না। আমার আট লক্ষ টাকা জমা রয়েছে। ’

টাকা জমা রেখে ফেরত না পাওয়া গ্রাহক মহিবুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রথম কিছুদিন লাভ দিয়েছিল। এখন লাভ তো দূরের কথা, আসল টাকা নিয়েই লাপাত্তা ফাস্ট মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি।

এ ব্যাপারে ফাস্ট মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির চেয়ারম্যান এস.এম শরিফ উজ-জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন,  ‘অনেক সদস্যের কাছে আমাদের টাকা পাওনা আছে। ঐ টাকা আদায় হলেই গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করা হবে। আমরা একটু ক্রাইসিসে আছি। ’

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘অভিযোগ পেয়ে ফাস্ট মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে গ্রাহকদের ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। ’

বাংলাদশে সময়: ০৬১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৬
জেএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।