ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নৌকাবাইচে মাতলো খুলনা

মাহবুবুর রহমান মুন্না, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৬
নৌকাবাইচে মাতলো খুলনা ছবি: মানজারুল ইসলাম-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রূপসা নদীর পাড় থেকে (খুলনা): আবহমান বাংলার চির চেনা ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে প্রাচীন ইতিহাস সমৃদ্ধ শিল্প নগরী খুলনার রূপসা নদীতে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে দেশের বৃহত্তম মোবাইল অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণফোনের সহযোগিতায় নগর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ১১তম এই নৌকা বাইচের আয়োজন করে।

নৌকাবাইচ দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধাসহ লাখো মানুষ জড়ো হন নদীর দু’পাড়ে। শুধু তাই নয়, নৌকাবাইচ উপভোগ করতে নৌপথে ইঞ্জিন চালিত নৌকাযোগেও আসেন অনেকে।

রূপসা নদীর প্রবল স্রোত ও ঢেউয়ের মাঝে মাঝিদের সাজ আর বাদ্যের ঝংকারে মুখরিত হয়ে ওঠে নদীর দু’তীর। নৌযান নিয়ে নদীতে নেমে, দু’তীরবর্তী ভবনের ছাদে এবং খানজাহান আলী (র.) (রূপসা সেতু) সেতুর ওপর উঠে এ নৌকাবাইচ প্রত্যক্ষ করেন রূপসা পাড়ের লাখো জনতা।

এ প্রতিযোগিতায় মোট ২৮টি নৌকা অংশ নেয়। এর মধ্যে বড় নৌকা ১৯টি ও ছোট ৯টি। প্রতিটি নৌকাতে প্রায় অর্ধশত মাঝি ছিলেন।

নৌকাবাইচে বড় গ্রুপে খুলনার কয়রার সুন্দরবন টাইগার প্রথম, খুলনার তেরখাদার ভাই জলপরী দ্বিতীয় এবং খুলনার তেরখাদার আল্লাহ ভরসা তৃতীয় স্থান লাভ করে। এছাড়া ছোট নৌকা গ্রুপে খুলনার কয়রার সোনার তরী দল প্রথম, সাতক্ষীরার তালার জয় মা কালী দ্বিতীয় এবং খুলনার পাইকগাছার জয় মা ঐশ্বর্য তৃতীয় হয়েছে।

নৌকাবাইচে বড় গ্রুপে প্রথম পুরস্কার এক লাখ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৬০ হাজার টাকা এবং তৃতীয় পুরস্কার ৩০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। এছাড়া ছোট গ্রুপে প্রথম পুরস্কার ৫০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৩০ হাজার টাকা এবং তৃতীয় পুরস্কার ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়।

বিকেল ৩টায় রূপসা নদীর ১ নম্বর কাস্টম ঘাটে নৌকাবাইচের প্রধান সমন্বয়কারী খুলনা জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন-খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার নিবাস চন্দ্র মাঝি, অতিরিক্ত ডিআইজি হাবিবুর রহমান, খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসক শেখ হারুনুর রশীদ, গ্রামীণফোনের খুলনা সার্কেলের হেড মোল্লা নাফিজ ইমতিয়াজ, গ্রামীণফোনের হেড অফ রিজিওনাল সেলস-খুলনা এস.এম সাজ্জাদ হোসেন, নগর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রধান উপদেষ্টা শেখ আশরাফ-উজ-জামান, সভাপতি মোল্লা মারুফ রশীদ, সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান রহিম। পরে অতিথিরা বেলুন উড়িয়ে নৌকা বাইচের উদ্বোধন করেন।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় মহানগরীর ময়লাপোতা মোড় থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় শোভাযাত্রার শোভা বর্ধনে হাতি ও প্রতীকী নৌকা নিয়ে মাঝি-মাল্লারা অংশ নেন।

১ নম্বর কাস্টম ঘাট থেকে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে খানজাহান আলী সেতুতে (রূপসা সেতু) গিয়ে শেষ হয়।

বাইচ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যা সাতটায় রূপসা ফেরিঘাটে প্রতিবারের মত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৬
এমআরএম/ওএইচ/আরআই

**
হেইয়ো রে হেইয়ো... (ভিডিও)
** প্রাণের উৎসবে মেতেছে রূপসার দু’পাড়
** গ্রামীণফোনের নৌকাবাইচ উপলক্ষে খুলনায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।