ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

প্রথম নারী নির্বাচন কমিশনার হতে পারেন জেসমিন টুলী!

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৬
প্রথম নারী নির্বাচন কমিশনার হতে পারেন জেসমিন টুলী!

ঢাকা: নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ইতিহাসে এই প্রথম বিভিন্ন মহল থেকে নারী নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের বিষয়ে আলোচনা ও দাবি উঠেছে। এক্ষেত্রে পদন্নোতি পেয়ে সদ্য অবসরে যাওয়া অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলীর নামই কেবল শোনা যাচ্ছে।

ইসির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারাও জেসমিন টুলীকেই নির্বাচন কমিশনার হিসেবে চাচ্ছেন। এর পেছনে দুটো কারণ মনে করছেন তারা। প্রথমত, তার মতো অভিজ্ঞ কর্মকর্তা আর নেই (যদিও তিনি বর্তমানে অবসর পরবর্তী ছুটিতে আছেন)। তাই তিনি নির্বাচন কমিশনার হলে কাজের গতি বাড়বে।

দ্বিতীয়ত, জেসমিন টুলীই ইসির একমাত্র কর্মকর্তা। যিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে নির্বাচন করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নাম কুড়িয়েছিলেন। সেখানে ভোটকেন্দ্র তছনছ করে ফেলা হলেও পুনরায় ভোটকেন্দ্র স্থাপন করে তিনিই নির্বাচন করেছিলেন। আফগানিস্তানে তিনি জাতিসংঘের নির্বাচন প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।

এদিকে, সেখান থেকে ফিরে তিনি দেশেও রেখেছেন সাহসের স্বাক্ষর। ২০১০ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সহিংস পরিস্থিতির মধ্যেও তিনি নির্বাচন করেছিলেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে তিনি সে সময় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মতো লোককে আটকও করিয়েছিলেন। এসব নানা বিচার বিশ্লেষণে ইসি কর্মকর্তারা মনে করছেন সরকার তাকেই নারী নির্বাচন কমিশনার হিসেবে প্রথম কাউকে নিয়োগ দেবে।

নারায়নগঞ্জ সিটি নির্বাচনের পরপরই তিনি উপ-সচিব থেকে যুগ্মসচিব পদে পদন্নোতি পান। এরপর ২০১৬ সালের ২৪ অক্টোবরে অবসরে যাওয়ার ১ মাস আগেই (২৮ সেপ্টেম্বর) আগে তিনি অতিরিক্ত সচিব হিসেবে পদন্নোতি পান। কর্মকর্তাদের ধারণা, নির্বাচন কমিশনার হিসেবে যারা নিয়োগ পাচ্ছেন, তারা অতিরিক্ত সচিব বা যুগ্মসচিব পদ মার্যাদার। আর জেসমিন টুলীকে যেহেতু অবসরের ঠিক আগ মুহূর্তে অতিরিক্ত সচিব করা হয়েছে, সেহেতু তিনিই হচ্ছেন দেশের প্রথম নারী নির্বাচন কমিশনার।

ইসি সূত্র জানিয়েছে, সরকারের দুটি মহল দুই রকম চাচ্ছে। একটি মহল চাচ্ছে, তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিতে। আবার অপর একটি মহল চাচ্ছে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে।
এক্ষেত্রে জেসমিন টুলীর চাকরির মেয়াদ চুক্তিভিত্তিক ১ বছর বাড়ানোর বিষয়ে একটি ফাইল এরইমধ্যে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আর তা না হলে তিনিই হচ্ছেন দেশের প্রথম নারী নির্বাচন কমিশনার।

এ বিষয়ে জেসমিন টুলী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা তরফ থেকে তো কোনো অসু্বিধা নেই। দায়িত্ব পেলে পালন করবো।

জেসমিন টুলী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালেয় থেকে রসায়ন বিষয়ে অনার্স ও অর্গানিক রসায়ন বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করে ১৯৮৪ সালে সিনিয়র সচিব হিসেবে নির্বাচন কমিশনে যোগ দেন। এরপর ধাপে-ধাপে পদন্নোতি পেয়ে তিনি অতিরিক্ত সচিব হিসেবে অবসরে যান। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি ১১টি সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ  উপ-সচিব ও যুগ্ম-সচিব হিসেবে সরাসরি বড়-বড় নির্বাচন সম্পন্ন করেছেন।

দেশে এ পর্যন্ত ২৩ জন ব্যক্তি নির্বাচন কমিশনার হয়েছেন। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার হয়েছেন ১১ জন। কিন্তু এদের মধ্যে কেউ নারী ছিলেন না। বর্তমান সরকার নারী ক্ষমতায়নের অংশ হিসেবে সব ক্ষেত্রেই নারীর অংশগ্রহণ বাড়াচ্ছে। সে হিসেবেই সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে এবার নির্বাচন কমিশন নারী নির্বাচন কমিশনার পাচ্ছে।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ আগামী ফেব্রুয়ারিতে শেষ হচ্ছে। যাদের সার্চ কমিটি গঠন করে নিয়োগ চূড়ান্ত করেছিলেন রাষ্ট্রপতি। এবার সেভাবেই নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা গণমাধ্যমে বলেছেন আইনমন্ত্রী।

সংবিধানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অনধিক চার নির্বাচন কমিশনার নিয়ে সর্বোচ্চ পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠনের বিধান রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৬
ইইউডি/টিআই

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।