ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সময় ও ব্যয় বৃদ্ধির চক্করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৬
সময় ও ব্যয় বৃদ্ধির চক্করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

ঢাকা: সময় ও ব্যয় বৃদ্ধির চক্করে পড়েছে রাজধানীর যানজট নিরসনে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (উড়াল সড়ক) নির্মাণ কাজ। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিপরীতে এয়ারপোর্ট রোডের কাওলা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত সংযোগ সড়কসহ ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে এক্সপ্রেসওয়েটি।

 

২০১০ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়নের কথা ছিল স্বপ্নের এ প্রকল্পটি। পরে মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন খাতে তৃতীয়বারের মতো ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে।
 
সব খাত মিলিয়ে প্রাথমিকভাবে মূল প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ৮ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা। যার মধ্যে ৬ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকা বৈদেশিক বিনিয়োগ এবং ২ হাজার ২৫৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা ভায়াবিলিটি গ্যাপ ফান্ড (ভিজিএফ) হিসাবে বাংলাদেশ সরকার বহন করবে। তৃতীয় ধাপে মোট প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ৬৫৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
 
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণে সরকার ২ হাজার ৭৮০ কোটি ৬০ লাখ টাকা সংস্থান করতে পেরেছে। বাকি ১০ হাজার ৮৭৩ কোটি ১০ লাখ টাকা প্রকল্প সাহায্য নিতে চায়।  
 
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন সংক্রান্ত প্রাক্কলন, ইউটিলিটি রিলোকেশন এবং পরামর্শক খাত বাবদ প্রাথমিকভাবে ২ হাজার ২১৪ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল।  পরে এসব খাতে ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ৩ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা। তৃতীয় ধাপে একই খাতে আবারও ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগে করা প্রস্তাবে এ খাতে ৪ হাজার ৮৮৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে।  

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পরিচালক (পিডি)  কাজী মোহাম্মদ ফেরদৌস বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পের আওতায় সব মৌজায় জমির দাম এক নয়। কোথাও শতক প্রতি ৫৫ লাখ টাকা, কোথাও আবার ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা দরে অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়া পুনর্বাসন খাতেও ব্যয় বাড়ছে।  
 
তিনি জানান, ১৩০ একর ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা, পুনর্বাসন বাবদ ৯৯৫ কোটি টাকা এবং ইউটিলিটি রিলোকেশন বাবদ ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছে।
 
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ঢাকার উত্তর-দক্ষিণে বিকল্প সড়ক সৃষ্টি হবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি হেমায়েতপুর-কদমতলি-নিমতলি-সিরাজদিখান-মদনগঞ্জ-ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক-মদনপুরে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করবে।  

চট্টগ্রাম, সিলেটসহ পূর্বাঞ্চল এবং পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যানবাহন ঢাকায় প্রবেশ না করে সরাসরি উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে প্রবেশ করবে। উত্তরাঞ্চল থেকে আসা যানবাহনগুলো ঢাকাকে বাইপাস করে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সরাসরি যাতায়াত করতে পারবে।
 
এর ফলে ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী অংশে যানজট দূর হবে।  

প্রকল্পের রুটগুলো হচ্ছে- শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-কুড়িল- বনানী-মহাখালী- তেঁজগাও- মগবাজার- কমলাপুর-সায়দাবাদ-যাত্রাবাড়ি-ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক (কুতুবখালী)। বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী যেতে সর্বোচ্চ সময় লাগবে ২০ মিনিট।
 
প্রথম ধাপে বিমানবন্দর থেকে শুরু হয়ে বনানী পর্যন্ত ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার, দ্বিতীয় ধাপে বনানী থেকে মগবাজার পর্যন্ত ৫ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার এবং শেষ ধাপে মগবাজার থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ৬ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার উড়াল সড়ক নির্মাণ করা হবে।  
 
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নানা কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ধীরগতি দেখা গেছে। দীর্ঘদিন পরে প্রথম ধাপের ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের অধিগ্রহন চলমান আছে। বিনিয়োগকারী নির্মাণের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে। নির্মাণ পূর্ব প্রস্তুতিমূলক কাজও চলমান আছে। সার্বিকভাবে প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি মাত্র ০৭ শতাংশ।  
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।