ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের পথ স্বর্গে নেবে না

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০১৬
সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের পথ স্বর্গে নেবে না

ঢাকা: মাদকাশক্তি, সন্ত্রাস, উগ্রপন্থা, জঙ্গিবাদ থেকে যুব সমাজকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা চাই না আমাদের দেশের যুব সমাজ বিপথে চলে যাক, বাবা-মায়ের দুঃখের কারণ হোক।

তিনি বলেন, আজকে যারা ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে, মানুষ হত্যা করে, তাদের ঠাঁই কখনও বেহেশতো হবে না, দোজখে হবে।

এ কথা তাদের মনে রাখা উচিত। এসব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থেকে নিজের মেধা, কর্মশক্তি কাজে লাগিয়ে নিজের জীবনকে, পরিবারকে উন্নত করতে হবে। ফলে দেশটাও উন্নত হবে।

সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের পথ মানুষকে স্বর্গে নেবে না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ পথ মানুষকে সুষ্ঠু পথে নিয়ে যায় না। এ পথ বেহেশত আর স্বর্গে নিয়ে যাবে না। বেহেশতে নিয়ে হুর-পরীও দেবে না। ইসলাম শান্তির ধর্ম। পবিত্র ধর্ম। ধর্মের নামে মানুষ খুন করা, ইসলাম মানুষ খুন করার অধিকার দেয় নাই। শেষ বিচার করবেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। সে কথা মনে রাখতে হবে।

মঙ্গলবার (০১ নভেম্বর) রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে জাতীয় যুব দিবস ২০১৬ এর উদ্বোধন ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

‘আত্মকর্মী যুব শক্তি, টেকসই উন্নয়নের মূল ভিত্তি’- জাতীয় যুব দিবসের এবারের প্রতিপাদ্যকে মনে রেখে নিজ নিজ ক্ষেত্রে কাজ করতে সবরর প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

যুব শক্তিকে দেশের প্রাণ ও উন্নয়ন-অগ্রগতির চালিকা শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যুব সমাজকে শ্রম এবং মেধা বিকাশের সুযোগ করে দিলে তারা অসাধ্য সাধন করতে পারে। টেকসই বাংলাদেশ গড়তে যুব সমাজকে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখারও আহ্বান জানান তিনি।

নতুন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের পাশাপাশি পুরোনো কেন্দ্রগুলো সম্প্রসারণসহ প্রশিক্ষিত যুব সমাজ গড়তে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের জনশক্তিকে মানবসম্পদে রূপান্তরিত করছি।

তিনি যুব প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আওতায় ৪০ শতাংশ যুব নারী প্রশিক্ষণ নিচ্ছে বলেও জানান। একই সঙ্গে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি যুবদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে কর্মসংস্থান ব্যাংক প্রতিষ্ঠা, বিনা জামানতে ঋণ, বিদেশগামীদের প্রশিক্ষণ, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ, ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে ঘরে বসে বিদেশে কাজ করে আয় করার প্রশিক্ষণ, মোবাইল বাসে তথ্য প্রযুক্তি প্রশিক্ষণসহ প্রশিক্ষিত জনগোষ্ঠী গড়তে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

কারও কথায় প্ররোচিত হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেউ যেন বিদেশে পাড়ি না জমায় সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধ পথে বিদেশে পারি দেয়া, তারপর অকাল মৃত্যু, নিঃস্ব হয়ে ফিরে আসা এই জাতীয় ঘটনা যাতে না ঘটে। তার জন্য বিভিন্ন ভাবে প্রচারণার ব্যবস্থা, বিভিন্ন ডকুমেন্টারি তৈরি করে প্রচার করা হচ্ছে, মানুষ সচেতন হচ্ছে।

যারা বিদেশ যাচ্ছে তাদের তথ্য সংরক্ষণের বিষয়ও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নানামুখী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা আমরা করে দিচ্ছি। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। যেখানে ক্ষুদ্র-মাঝারি-বৃহৎ শিল্প গড়ে উঠবে। কর্মের সংস্থান হবে। তার জন্য আমাদের প্রশিক্ষিত লোক দরকার। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।
 
প্রশিক্ষণ ভাতা ৪০ টাকা থেকে ১০০ টাকা করার ঘোষণা দেন তিনি।
 
বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের সফলতা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ রুখতে পারবে না।
 
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী শ্রী বীরেন শিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, যুব ও ক্রীড়া সর্ম্পকিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ আহসান রাসেল, সচিব কাজী আখতার উদ্দিন আহমেদ।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আনোয়ারুল করিম।
 
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সেরা ১৯ যুব উদ্যোক্তা ও সংগঠকের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠান শেষে শিল্পকলা একাডেমী আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন তিনি।

** যুবশক্তি দেশের উন্নয়নের প্রাণ

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৬
এমইউএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।