ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

খুলনায় টাকা ফেরতের দাবি এহসান সোসাইটির গ্রাহকদের

ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০১৬
খুলনায় টাকা ফেরতের দাবি এহসান সোসাইটির গ্রাহকদের ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খুলনা: খুলনায় ‘এহসান সোসাইটি’ নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের প্রায় ১১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সংস্থার পরিচালক মুফতি গোলাম রহমান, জেলা সমন্বয়কারী রশিদ আহমাদ এবং ম্যানেজার রবিউল ইসলাম নিরীহ ও সহজ-সরল মানুষের কাছ থেকে এ অর্থ লুটে নিয়েছেন।

সুদমুক্ত এ সংস্থায় অর্থ বিনিয়োগ করে ১০ সহস্রাধিক গ্রাহক প্রতারিত হয়েছেন। অর্থ ফেরত চাইলে উল্লিখিত ব্যক্তিরা নানা ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে।

 

এহসান সোসাইটি ও এর আওতাধীন সংস্থা এহসান রিয়েল এস্টেট এ বিনিয়োগকারী কর্মী এবং ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (০১ নভেম্বর)  দুপুর সাড়ে ১২টায় খুলনা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে অর্থ আদায়ের দাবিতে তিন দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে অর্থ আদায় সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল মতিন অভিযোগ করেন, ২০০৪ সাল থেকে এহসান সোসাইটি খুলনা এলাকায় মুফতি গোলাম রহমানের পরিচালনায় কার্যক্রম শুরু করে। তখন থেকেই বিভিন্ন সেমিনারের মাধ্যমে সংস্থার সংস্থার পরিচালক মুফতি গোলাম রহমান, জেলা সমন্বয়কারী রশিদ আহমাদ এবং গোলাম রহমানের ভাগ্নে ম্যানেজার রবিউল ইসলাম খুলনার বিভিন্ন মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও মাদরাসার শিক্ষকদের সুদমুক্ত প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে উৎসাহ দেন। যার ফলশ্রুতিতে আলেমরা কাজ শুরু করেন। দু’শতাধিক মাঠ কর্মীর মাধ্যমে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এহসান সোসাইটিতে মাসিক সঞ্চয় বাবদ খুলনা ও সোনাডাঙ্গা থেকে ৩ কোটি টাকা, খালিশপুর থেকে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং দিঘলিয়া উপজেলা থেকে ৪০ লাখ টাকা আমানত সংগ্রহ করা হয়। এছাড়া রিয়েল এস্টেটের ব্যবসায় মাসিক মুনাফার কথা বলে এসব এলাকার গ্রাহকদের কাছ থেকে আরও প্রায় ৬ কোটি টাকাসহ দু’টি সংস্থায় মোট ১০ কোটি ৯০ লাখ টাকা গ্রহণ করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, উল্লিখিত ব্যক্তিরা গ্রাহকদের জমাকৃত টাকা ফেরত না দিয়ে জমি ও ফ্লাট বিক্রির কথা বলে কালক্ষেপণ করতে থাকে। এরপর দীর্ঘ দু’বছর পার হলেও তারা টাকা ফেরত দেয়নি। এ বিষয়ে কিছু বলতে গেলে তারা বাড়াবাড়ি না করতে মাঠকর্মীদের পাল্টা হুমকি দিচ্ছে। এ অবস্থায় আমানতের টাকা ফেরত দিতে না পারায় মাঠকর্মীরা গ্রাহকদের হাতে প্রতিনিয়ত লাঞ্ছিত হচ্ছেন। এ কারণে অনেকেই মারাত্মক অসুস্থ এবং স্ট্রোক করেছেন। এমনকি অনেকেই মসজিদ-মাদরাসা থেকে চাকরিচ্যুত হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।

অর্থ ফেরত পেতে সংবাদ সম্মেলনে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আগামী ২৭ নভেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি পেশ, ২৮ নভেম্বর নগরীতে মানববন্ধন এবং সুবিধাজনক সময়ে অবস্থান ধর্মঘট পালন। এর মধ্যেও টাকা ফেরত দেওয়া না হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষে কমিটির সভাপতি মাওলানা আবু যর, মাওলানা হেমায়েত উদ্দিন, হাফেজ আব্দুল মালেক, হাফেজ মোস্তাফিজুর রহমান, মাওলানা মোশাহিদুল্লাহ, মুফতি মোহাম্মদ আলী, মো. জামাল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, এহসান সোসাইটির খুলনা বিভাগীয় পরিচালক মুফতি গোলাম রহমান একই সঙ্গে সংস্থার কেন্দ্রীয় শরীয়াহ কাউন্সিলের সহ-সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়া তিনি নগরীর বাগমারাস্থ মারকাযুল ফিকহিল ইসলামী মাদরাসার পরিচালক। জেলা সমন্বয়কারী মুফতি রশিদ আহমাদ নগরীর ডালমিল মোড়স্থ মক্কি মসজিদের ইমাম।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৬
এমআরএম/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।